৫,৮০০টি ভুয়ো সংস্থার লেনদেনে হতবাক কেন্দ্র

কালো টাকা আটকাতে শুধুমাত্র করফাঁকি দিতে তৈরি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কড়া হয়েছে সরকার। নামকা -ওয়াস্তে তৈরি যে সব ‘ভুয়ো’ সংস্থার আদপে কোনও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডই নেই। গত মাসে এ ধরনের ২ লক্ষের বেশি শেল সংস্থার নথিভুক্তি বাতিল করেছে কেন্দ্র।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:১৯
Share:

একটি সংস্থারই অ্যাকাউন্ট প্রায় ২,১৩৪টি। কারও আর একটু কম, ৯০০, ৩০০। মাত্র কয়েকটির ১০০। একটি ব্যাঙ্কে আবার নোট বাতিলের দিন অর্থাৎ গত ৮ নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ৪২৯টি সংস্থার অ্যাকাউন্টে এক -ফোঁটাও টাকা ছিল না। অথচ তার পরে সেখানে জমা ও তোলার অঙ্ক ছাড়িয়েছে ১১ কোটি। নোট বাতিলের পরে ৫,৮০০টি ‘ভুয়ো’ (শেল) সংস্থার লেনদেন নিয়ে ১৩টি ব্যাঙ্কের থেকে এমনই চোখ কপালে তোলার মতো তথ্য হাতে এসেছে বলে দাবি কেন্দ্রের।

Advertisement

কালো টাকা আটকাতে শুধুমাত্র করফাঁকি দিতে তৈরি সংস্থাগুলির বিরুদ্ধে কড়া হয়েছে সরকার। নামকা -ওয়াস্তে তৈরি যে সব ‘ভুয়ো’ সংস্থার
আদপে কোনও ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডই নেই। গত মাসে এ ধরনের ২ লক্ষের বেশি শেল সংস্থার নথিভুক্তি বাতিল করেছে কেন্দ্র। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট বাজেয়াপ্তের। সেগুলির ডিরেক্টরদেরও অযোগ্য বলে চিহ্নিত করার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে।

এই পরিস্থিতিতে প্রথম দফায় ওই সংস্থাগুলির মধ্যে প্রায় ৫,৮০০টির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট পরিচালনা ও নোটবন্দির পরবর্তী সময়ে সেগুলিতে লেনদেনের তথ্য কেন্দ্রের কাছে জমা
দিয়েছে ১৩টি ব্যাঙ্ক। কেন্দ্রের দাবি, সেই খতিয়ানে প্রথমেই যে বিষয়টি তাদের হতবাক করেছে তা হল, সংস্থাগুলির মোট অ্যাকাউন্ট সংখ্যা ১৩,১৪০ হওয়া। এগুলির মধ্যে কিছু সংস্থার ১০০টির বেশি অ্যাকাউন্ট রয়েছে নিজেদের নামে। বাকি সকলের তা অস্বাভাবিক রকম বেশি।

Advertisement

ব্যাঙ্কগুলি আর এক প্রস্ত ধাক্কা খেয়েছে নোট বাতিলের আগে ও পরে অ্যাকাউন্টগুলির লেনদেনের সামঞ্জস্য খতিয়ে দেখতে গিয়ে। জানানো হয়েছে, ঋণ বাদ দিয়ে ৮ নভেম্বর পর্যন্ত ওই ৫,৮০০ সংস্থার অ্যাকাউন্টে ছিল ২২.০৫ কোটি টাকা। অথচ পরের দিন অর্থাৎ গত ৯ নভেম্বর থেকে তাদের নথিভুক্তি বাতিলের দিন পর্যন্ত সেই সংস্থাগুলিরই অ্যাকাউন্টে সব মিলিয়ে জমা পড়েছে ৪,৫৭৩.৮৭ কোটি। তার পরে তুলেও নেওয়া হয়েছে ৪,৫৫২ কোটি। যে হিসেব মেলাতে গিয়ে হিমসিম খেয়েছে কেন্দ্র। কারণ, ঋণ যোগ করার পরে তাতে প্রায় ৮০.৭৯ কোটি টাকার গরমিল ধরা পড়ছে।

কেন্দ্রের প্রশ্ন, নোট বাতিলের আগে এক একটি সংস্থার এতগুলি করে অ্যাকাউন্টে যেখানে সামান্য বা কোনও টাকা ছিল না, সেখানে পরে এত টাকা ঢুকল ও বেরোলো কী করে? তার পরে আবার ‘বিস্ময়কর’ ভাবে সেগুলিতে লেনদেন বন্ধ হয়ে গেল।

কেন্দ্র জানিয়েছে, মোট যত শেল সংস্থার লেনদেন নিয়ে তদন্ত চলছে, তার মধ্যে এই হিসেব মাত্র ২.৫ শতাংশের। ফলে আগামী দিনে কালো টাকার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ে অনেক ‘চমক’ সামনে আসা বাকি বলে মনে করছে তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement