ফাইল চিত্র।
গয়নায় সোনার গুণমান ঠিক রাখার লক্ষ্যে গত ২৩ জুন চালু হয়েছিল হলমার্কিং ব্যবস্থা। ১৪, ১৮ এবং ২২ ক্যারাটের গয়নায় তা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই দেশের ২৫৬টি জেলায় চালু করা হয়েছে হলমার্ক কেন্দ্র। পরবর্তী পর্যায়ে সর্বত্র তা খোলার পরিকল্পনা রয়েছে ক্রেতাসুরক্ষা মন্ত্রকের। তবে হলমার্ক কেন্দ্রগুলির সংগঠন ও গয়না শিল্পের বক্তব্য, এই পরিকাঠামো বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা থাকলেও, সর্বত্র নতুন কেন্দ্র খোলা হলে তা কতটা লাভজনক হবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় পেশ করা রিপোর্টে জানানো হয়েছে, এ পর্যন্ত সারা দেশে ১.২৭ লক্ষ গয়না ব্যবসায়ী হলমার্কিং ব্যবস্থায় নিজেদের ব্যবসাকে নথিভুক্ত করিয়েছেন। গত ছ’মাসে এই সংখ্যা চার গুণ বেড়েছে। নথিভুক্তির জন্য অনলাইনে আবেদন, নিখরচায় নথিভুক্তিকরণের মতো বিভিন্ন পদক্ষেপ করেছে ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস (বিআইএস)। বিআইএস অনুমোদিত হলমার্ক কেন্দ্রের সংখ্যা এখন ৯৭৬। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব হলমার্কিং সেন্টারসের প্রাক্তন সভাপতি হর্ষদ অজমেঢ়া জানান, পশ্চিমবঙ্গের ২৩টি জেলার ১৯টিতে মোট ১৩১টি কেন্দ্র রয়েছে। দেশের মধ্যে গয়নায় সব থেকে বেশি হলমার্কিং করানো হয় মুম্বইয়ে। সপ্তম স্থানে কলকাতা।
তবে রাজ্যে আরও হলমার্ক কেন্দ্র হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করেন স্বর্ণশিল্প বাঁচাও কমিটির কার্যকরী সভাপতি সমর দে। তিনি বলেন, ‘‘কলকাতায় অনেক হলমার্ক কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু জেলার ব্যবসায়ীদের হলমার্কিং করাতে অনেকটা পথ পাড়ি দিতে হয়। এর সঙ্গে নিরাপত্তার প্রশ্নও জড়িয়ে রয়েছে।’’ তিনি জানান, আলিপুরদুয়ার এবং জলপাইগুড়ি জেলায় এখনও হলমার্ক কেন্দ্র হয়নি। আবার পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, উত্তর দিনাজপুর, মালদহ-সহ কিছু জেলায় রয়েছে একটি বা দু’টি। দার্জিলিং জেলায় সমতলে দু’টি কেন্দ্র থাকলেও পাহাড়ে একটিও নেই।
আবার অন্য দিকে অজমেঢ়া মনে করেন, হলমার্ক করানোর যথেষ্ট চাহিদা না থাকাও বহু জায়গায় কেন্দ্র গড়ে না ওঠার অন্যতম কারণ। তাঁর বক্তব্য, হলমার্ক কেন্দ্র তৈরি করেন বেসরকারি উদ্যোগপতিরা। যথেষ্ট ব্যবসা পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকলে তাঁরাও বিনিয়োগ করবেন না। বিআইএসের এক রিপোর্ট উল্লেখ করে আজমেরা বলেন, ‘‘দেশে ৭৬৫টি এমন হলমার্ক কেন্দ্র রয়েছে যাদের দিনে ১০০০টি গয়নায় হলমার্ক করার ক্ষমতা রয়েছে। কিন্ত গড়ে তারা করছে দিনে ৮৫টি। কেন্দ্রগুলিকে লাভজনক করতে হলে হলমার্ক করার জন্য চার্জ বাড়ানো জরুরি।’’