শুক্রবার, প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করে তারই দিশা খোঁজার চেষ্টা করেছেন। ফাইল ছবি।
মূল্যবৃদ্ধি তো বটেই। তার সঙ্গে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমে যাওয়া এবং আমদানির উপরে নির্ভরতা নিয়ে চিন্তিত মোদী সরকার। এই উদ্বেগ নিয়েই আজ বাজেটের আগে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁদের কাছে জানতে চাইলেন, কী ভাবে বিশ্ব বাজারে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার মোকাবিলা করা যায়।
সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অধিকাংশ অর্থনীতিবিদই বলেছেন, বিশ্ব বাজারে ফের মন্দার আশঙ্কা তৈরি হলেও ভারতের অর্থনীতিতে তার বিরাট প্রভাব পড়বে না। বরং বর্তমানে আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় মাথা তোলা অনিশ্চয়তার মোকাবিলা করে কী ভাবে আর্থিক বৃদ্ধিতে গতি আনা যায় এবং কোন পথে কৃষি ক্ষেত্রে চাষিদের আয় বাড়িয়ে গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তোলা সম্ভব, সে ব্যাপারে নিজেদের মতামত জানিয়েছেন তাঁরা।
১ ফেব্রুয়ারি আগামী অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করতে চলেছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সংসদের বাজেট অধিবেশন শুরু হবে ৩১ জানুয়ারি। সেই দিনই পেশ হবে কেন্দ্রের আর্থিক সমীক্ষা। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে এটিই মোদী সরকারের শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেট। ফলে ভোটের দিকে তাকিয়ে তা জনমোহিনী হবে বলেই মনে করছে রাজনৈতিক শিবির। কিন্তু মোদী সরকারের অন্দরমহলের দাবি, মাত্রাছাড়া খয়রাতির পথে হাঁটা হবে না।
প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে এ দিন ১৯ জন অর্থনীতিবিদ, গবেষক, অর্থনীতির অধ্যাপক উপস্থিত ছিলেন। সেখানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি বিশ্ব বাজারে অনিশ্চয়তা সত্ত্বেও ভারতের অর্থনীতির হাল শক্ত হাতে ধরে রাখা এবং আর্থিক বৃদ্ধির হারে গতি আনার উপরে জোর দিতে চান। বিশ্ব বাজারের পরিবেশকে কাজে লাগিয়ে সুযোগ তৈরি করতে চান দেশে। তাতে সরকারের সঙ্গে বেসরকারি ক্ষেত্রকেও এ জন্য হাত মেলাতে হবে। চেনা ছকের বাইরে বেরিয়ে ভাবতে হবে। অর্থনীতিবিদেরা তাঁকে বলেন, বিশ্ব বাজারে দোলাচল সত্ত্বেও ভারতের ছবি এখনও যথেষ্ট উজ্জ্বল।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের বক্তব্য, প্রাথমিক ভাবে পরিসংখ্যান মন্ত্রক পূর্বাভাস করেছে, চলতি অর্থবর্ষে জিডিপি বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ ছোঁবে। কিন্তু এর পরের হিসেবে এই বৃদ্ধির হার আরও কমবে। পরিষেবা ক্ষেত্র ঘুরে দাঁড়ালেও কারখানায় উৎপাদন সে ভাবে চাঙ্গা হতে পারছে না। কারণ বিশ্ব বাজারে চাহিদা এখন খুবই কম। দেশে কেনাকাটা ফের বাড়ছে। কিন্তু সব জায়গায়, সব ক্ষেত্রে সমান ভাবে নয়। তার উপরে মূল্যবৃদ্ধিও চিন্তার কারণ। সম্প্রতি যার হার কিছুটা কমেছে। আশা করা যায়, সেই সুবাদে বাজারে কেনাকাটা চাঙ্গা হবে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এক দিকে অর্থনীতির এই বাস্তবতা, অন্য দিকে ভোটের আগের বাজেট— এই দু’টি বিষয়ে ভারসাম্য রেখেই সরকারকে এগোতে হবে। আজ প্রধানমন্ত্রী অর্থমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে বৈঠক করে তারই দিশা খোঁজার চেষ্টা করেছেন।