ছবি প্রতীকী
কোভিডের প্রথম দফার আক্রমণ তখন কিছুটা কমেছে। দীর্ঘ লকডাউন শেষে দেশ জুড়ে আর্থিক কাজ-কর্ম খুলছে। মোদী সরকারের নেতা-মন্ত্রীরা লাগাতার দাবি করছেন, অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ স্পষ্ট। বৃদ্ধির চাকায় গতি আসল বলে। এ বার সামনে এল, খোদ সরকারি পরিসংখ্যানই বলছে ঠিক সেই সময়, অর্থাৎ গত অক্টোবর-ডিসেম্বরে শহরাঞ্চলে বেকারত্বের হার বেড়ে হয়েছিল ১০.৩%। তার আগের বছর ওই তিন মাসে তা ছিল ৭.৯%।
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, এটা ঠিকই করোনাকালে বহু সংস্থা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অসংখ্য কর্মী ছাঁটাই হয়েছেন। প্রয়োজন থাকলেও নতুন নিয়োগের পথে হাঁটেনি বেশির ভাগ সংস্থা। কিন্তু তাদের প্রশ্ন, খোদ পরিসংখ্যান মন্ত্রকের আওতাভুক্ত জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের (এনএসও) সমীক্ষাতেই যেখানে বেকারত্বের এমন ভয়াবহ ছবি ধরা পড়েছে, সেখানে অর্থনীতির ছন্দে ফেরার কথা তখন বলা হচ্ছিল কী ভাবে? কারণ, আর্থিক কর্মকাণ্ড স্বাভাবিক হওয়ার ছাপ তো কর্মসংস্থানে পড়তেও বাধ্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, করোনার ধাক্কা দেশের কাজের বাজারে কতটা লেগেছে, এ বার তা ফের স্পষ্ট হল এনএসও-র পরিসংখ্যানে।
তার আগে অবশ্য পরিস্থিতি ছিল আরও খারাপ। গত অগস্টে এনএসও-র পরিসংখ্যানেই জানা যায়, আগের বছর জুলাই-সেপ্টেম্বরে দেশে বেকারত্বের হার পৌঁছে গিয়েছিল ১৩.৩ শতাংশে। তা এপ্রিল-জুনে লকডাউনের সময়ের ২০.৯% থেকে কম ঠিকই। কিন্তু ২০১৯ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরের ৮.৪ শতাংশের তুলনায় অনেক বেশি।
চলতি বছরে দেশে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে। সামনে তৃতীয় ঢেউয়ের চোখরাঙানি। উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র পরিসংখ্যান বলছে, অগস্টেও দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৯ শতাংশের কাছাকাছি। এমন অবস্থায় বৃহস্পতিবার অগস্টের মাসিক রিপোর্টে অর্থ মন্ত্রকের দাবি, দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কা সামলে ফের মাথা তোলা অর্থনীতি জুলাই-সেপ্টেম্বরে আরও দ্রুত ঘুরে দাঁড়াবে। তৃতীয় ঢেউ এলেও বহাল থাকবে সেই প্রক্রিয়া। ছন্দে ফেরার প্রমাণ হিসেবে এপ্রিল-জুনে ২০.১% আর্থিক বৃদ্ধি বা জুলাইয়ে ৯.৪% পরিকাঠামো বৃদ্ধির কথা বলেছে মন্ত্রক। তবে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করাচ্ছে, বিভিন্ন ক্ষেত্রের হিসেব কষা হয়েছে গত বছরের নিচু ভিতের নিরিখে।