নোট নাকচ নিয়ে তোপ দেগেছেন আগেই। এ বার পণ্য-পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু নিয়ে কেন্দ্রের তাড়াহুড়োকে নিশানা করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ। সেই সঙ্গে ফের এক হাত নিলেন নোটবন্দির সিদ্ধান্তকে।
সোমবার সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মনমোহনের দাবি, নোট বাতিলের পরে জিএসটি চালুর জন্যও যে ভাবে তাড়াহুড়ো করা হয়েছে, তাতে বৃদ্ধি ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা যথেষ্ট। তাঁর মতে, এই দুই পদক্ষেপের প্রভাবই বৃদ্ধির হারে পড়তে বাধ্য। বিশেষত অসংগঠিত ক্ষেত্র ও ছোট শিল্পের উপর। দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জি ডি পি) ৪০ শতাংশই যার উপর দাঁড়িয়ে।
এর আগে নোটবন্দির সিদ্ধান্ত ঘোষণার সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় তাকে সংসদে তীব্র আক্রমণ করেন মনমোহন। ভারতে উদার অর্থনীতির ভগীরথের হুঁশিয়ারি ছিল, যে ভাবে নোটবন্দি কার্যকর করা হয়েছে, তাতে কৃষি, ছোট শিল্প ধাক্কা খাবে। কষ্টে পড়বেন অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা। এতে জিডিপি ২ শতাংশ বিন্দু কমবে বলেও নিদান দিয়েছিলেন তিনি। একে কার্যত চিহ্নিত করেন পরিকল্পিত লুঠ ও আমজনতার টাকা তছরুপ হিসেবে।
মনমোহনের ওই নিদান নিয়ে তখন তাঁকে তীব্র আক্রমণ করেছিল কেন্দ্র। এ বিষয়ে কটাক্ষ করেছিলেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও। পরে অবশ্য দেখা গিয়েছে, চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে (এপ্রিল-জুন) বৃদ্ধি নেমেছে ৫.৭ শতাংশে। আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ৭.৯%।
একই ভাবে এ বার জিএসটি নয়, তা চালুর তাড়াহুড়ো নিয়ে কেন্দ্রের দিকে তোপ দাগলেন মনমোহন। যে কথা গত কয়েক মাসে বারবার বলেছে এ রাজ্যের সরকারও।
নোটবন্দি আর (তাড়াহুড়োয়) জিএসটি— দু’য়েরই ছায়া পড়ছে বৃদ্ধির উপর। দু’টিই অসংগঠিত ক্ষেত্র ও ছোট শিল্পকে ধাক্কা দিচ্ছে। জিডিপির ৪০% যার উপর দাঁড়িয়ে।
৮৬% নোট ফিরিয়ে নেওয়ার পরে হুড়মুড়িয়ে চালু করা হল জিএসটি। তাতে থেকে যাওয়া অনেক ত্রুটি এখন সামনে আসছে। বৃদ্ধির হারকে ধাক্কা দিতে এটি বাধ্য।
১৮/০৯/১৭
যে ভাবে (নোটবন্দি) প্রকল্প কার্যকর করা হচ্ছে, তাতে কৃষি, ছোট শিল্প ধাক্কা খাবে। অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীরা কষ্টে পড়বেন। আমার ধারণা, জিডিপি কমবে ২ শতাংশ বিন্দু।
যে ভাবে প্রকল্প কার্যকর করা হচ্ছে, তা কার্যত পরিকল্পিত লুঠ, সাধারণ মানুষের টাকা তছরুপের সামিল।
নোট তোলা ‘মনুমেন্টাল মিসম্যানেজমেন্ট’।
২৪/১১/১৬
মনমোহন সিংহ
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী