ফাইল চিত্র।
এক দিকে, রাজ্যে লগ্নির খতিয়ান। অন্য দিকে, বিজেপির আমলে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির রুগ্ণ হয়ে পড়া নিয়ে সমালোচনা। মঙ্গলবার আসানসোলে দলীয় কর্মী সম্মেলনে রাজ্য ও দেশের শিল্প-পরিস্থিতি নিয়ে বলতে গিয়ে এমনই তুলনা টানলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন সেই সঙ্গে ফের স্পষ্ট করলেন, তাঁর সরকারের লক্ষ্য কর্মসংস্থান। নিজে রেলমন্ত্রী থাকাকালীন রেলের অবস্থার কথা টেনেও কেন্দ্রকে বেঁধেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “বিশ্ব জুড়ে যে গ্যাসের কদর, তার বিপুল ভান্ডার মিলেছে রানিগঞ্জে। ২২ জুন ওই ‘শেল গ্যাস’ উত্তোলনের ব্যাপারে গ্রেট ইস্টার্ন এনার্জি কর্পোরেশনের সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। বাংলায় এটিই প্রথম শেল গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্প। রানিগঞ্জ অঞ্চলে ১৫,০০০ কোটি টাকা লগ্নি আসছে। কয়েক হাজার চাকরি হবে।” তাঁর দাবি, দুর্গাপুরে শেল গ্যাসের খোঁজ চালাবে এসআর গোষ্ঠী। ঢালবে ৭০০০ কোটি টাকা। কর্মসংস্থান হবে হাজার দশেক। এ দিন মমতার বক্তব্যে উঠে এসেছে আইটি পার্ক তৈরি, মঙ্গলপুরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল এস্টেট, নতুন চেহারায় পানাগড় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পার্ক তৈরির কথা, ডেউচা-পাচামির কয়লা খনি, তাজপুরে গভীর বন্দর ও বানতলায় চর্মশিল্পের কাজের মতো বিষয়ও। জানিয়েছেন, পানাগড়ে লগ্নি হয়েছে ৩৪০০ কোটি টাকা। রেলের প্রসঙ্গেবলতে গিয়ে টেনেছেন তাঁর রেলমন্ত্রী থাকার সময়ের কথা। মমতা বলেন, “যখন রেলমন্ত্রী ছিলাম, অমৃতসর-ডানকুনি পণ্য করিডর করে এসেছিলাম।এই ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফ্রেট করিডর হচ্ছে। এটি ঝাড়খণ্ড, রঘুনাথপুর, বাঁকুড়া, বড়জোড়া, পানাগড় হয়ে ডানকুনি পর্যন্ত যাবে। এর দু’পাশে বহু শিল্প হবে। ২৫০০ একর জমি দিয়েছি। ৭২,০০০ কোটি টাকা লগ্নি হচ্ছে।”
এর পরেই, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির অবস্থা নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন মমতা। বলেন, “চিত্তরঞ্জন রেল কারখানা এগিয়ে দিয়েছিলাম। এখন তার কী অবস্থা জানি না। রেলের প্রায়৮০,০০০ পদ তোলা হয়েছে। পরিকল্পনাকরছেন ওই কারখানা বন্ধের।” তাঁর দাবি, কোল ইন্ডিয়া, রেলের মতো রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্প বন্ধ করা চলবে না।
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গেও কেন্দ্র-রাজ্য তুলনা টেনেছেন মমতা। মোদী সরকারকে কটাক্ষ করে বলেছেন, “এখন দেশে বেকারত্ব ৪০% বেড়েছে। বাংলায় কর্মসংস্থান বেড়েছে ৪০%।”
যদিও বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই-এর মন্তব্য, “উনি ভুল পরিসংখ্যানে মানুষকে বিভ্রান্ত করতে খুবই দক্ষ। ফলে ওঁর এ সব বিভ্রান্তিকর কথার গুরুত্ব নেই।”