মোহন যাদব। —নিজস্ব চিত্র।
উন্নত আইন-শৃঙ্খলা, সস্তা ও সরল জমিনীতি এবং আর্থিক উৎসাহ— এই তিনে ভর করেই পশ্চিমবঙ্গ থেকে নিজের রাজ্যে লগ্নি নিয়ে যেতে চান মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব। সেই লক্ষ্যে শুক্রবার কলকাতায় রোড-শো করার কথা তাঁর। বুধবার যাদব জানান, ‘‘রোড শো-তে আমাদের রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা কতটা উন্নত তা তুলে ধরব। কারণ রাজনৈতিক ও সামাজিক শান্তি না থাকলে নতুন শিল্প গড়া অসম্ভব। জানাব, কী করে মধ্যপ্রদেশে সস্তা জমি ও আর্থিক উৎসাহের সুবিধা নিয়ে বাংলার সংস্থাগুলি আরও উন্নতি করতে পারে।’’ গত মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান কলকাতায় এসে মন্তব্য করেছিলেন, বাংলায় শিল্প স্থাপনের অন্যতম বাধা আইন-শৃঙ্খলা। বাংলা থেকে পুঁজি টানতে মোহনের মধ্যপ্রদেশের আইন-শৃঙ্খলাকে তুলে ধরার উৎসাহকে তাই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল।
খনিজ পদার্থের ভান্ডার থেকে কৃষির অগ্রগতি— এ দিন পশ্চিমবঙ্গ ও মধ্যপ্রদেশের একাধিক মিলের কথাও তুলে ধরেন যাদব। বলেন, সে জন্যই তাঁর রাজ্যে লগ্নি করতে সমস্যা হবে না। ইতিমধ্যেই তিনি মুম্বই, বেঙ্গালুরু, কোয়েম্বাত্তুরে রোড শো করেছেন। দাবি, ১.৯২ লক্ষ কোটি টাকার লগ্নি প্রস্তাব মিলেছে। দু’তিন মাসে যাবেন আমদাবাদ, পুণে, নয়াদিল্লি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, ‘‘৭ ও ৮ ফেব্রুয়ারি ভোপালে গ্লোবাল ইনভেস্টর সামিট হবে। তাতে শিল্পপতিদের এনে মধ্যপ্রদেশে লগ্নির ডাকও রোড শো-র মূল লক্ষ্য। শুধু বড় উৎপাদন নয়, তথ্যপ্রযুক্তি, পরিকাঠামো, বস্ত্র, সেমিকনডাক্টর, লজিস্টিক বা পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, গয়নার মতো ক্ষেত্রে জড়িত সংস্থার জন্য আলাদা উৎসাহ নীতি তৈরি করেছে মধ্যপ্রদেশ। যার মধ্যে রয়েছে সস্তা জমি, বিশেষ আর্থিক উৎসাহ, কর্মী প্রশিক্ষণে সহায়তা, স্ট্যাম্প ডিউটিতে ছাড় ইত্যাদি।’’ যাদবের দাবি, এই সব সুবিধার জন্যই ইনফোসিস, উইপ্রো, টিসিএস, মাইন্ডট্রি-র মতো তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা তাঁর রাজ্যে লগ্নি করেছে। গত তিন বছরে তথ্যপ্রযুক্তি রফতানি বেড়েছে ৪০ শতাংশের বেশি।
লগ্নির প্রক্রিয়া আরও মসৃণ করতে প্রতিটি জেলায় লগ্নি সহায়তা কেন্দ্র তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মধ্যপ্রদেশ। রাজ্যের সর্বত্র শিল্পের সমান প্রসারে আঞ্চলিক সম্মেলনও করছে। মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘তাঁদের বড় রাজ্যে এক এলাকার সঙ্গে অন্যটির অনেক ফারাক। তাই বুন্দেলখণ্ড, বাঘেলখণ্ড, মালওয়া, নিমার ও মহাকৌশলের জন্য আলাদা সুবিধার কথা ভেবে পৃথক পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই উজ্জ্বয়িনী, জবলপুর ও গ্বয়ালিয়রে তিনটি সম্মেলন হয়েছে। ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি লগ্নি প্রস্তাব এসেছে।’’ যাদবের বার্তা, প্রথাগত ও বৈদ্যুতিক গাড়ি, সেগুলির যন্ত্রাংশ, এঞ্জিনিয়ারিং-এর একাধিক কারখানাও তাঁর রাজ্যের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে। হাতে থাকা লগ্নি প্রস্তাব কার্যকর করতে ইনদওরের কাছে বৈদ্যুতিক গাড়ি ও অনুসারি শিল্পের জন্য আলাদা শিল্পতালুক গড়া হচ্ছে। তালুক হচ্ছে প্রতিরক্ষা, প্রযুক্তির জন্যও। এগুলিতে লগ্নি করলে সুবিধা পাবে সংস্থা।