২০১৭-র পথেই সম্ভবত হাঁটতে চলেছে ২০১৮।
জিএসটি ও নতুন আবাসন আইনের ধাক্কা সামাল দিতে ২০১৭ সালে বাজি ছিল কম দামি বাড়ি। পরিসংখ্যান বলছে, শুধুমাত্র এই ধরনের বাড়ি বিক্রিই বেড়েছে। বাদবাকি দামি ও বিলাসবহুল বাড়ির বিক্রি সেই তলানিতেই। বিশেষজ্ঞদের দাবি, নতুন বছরেও বৈতরণী পার করতে কম দাবি আবাসনই প্রধান ভরসা হবে এই শিল্পের।
কিন্তু এই আশার আলো দেখানো ছবিতে কলকাতার রং তুলনায় ফিকে। ২০১৬ সালের সঙ্গে তুল্যমূল্য বিচারে ২০১৭-এ মধ্যবিত্ত ফ্ল্যাটের বিক্রি বৃদ্ধির হার নেতিবাচক। বিশেষজ্ঞ সংস্থা কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ডের ৮ শহরের সমীক্ষায় ২০১৬-র তুলনায় ২০১৭-এ কলকাতা দ্বিতীয় থেকে তৃতীয় স্থানে নেমেছে। অনেক পেছন থেকে দৌড়ে মুম্বই ফিতে ছুঁয়েছে সকলের আগে। কম দামি আবাসনে ২০১৬-এ মুম্বই ছিল ছয় নম্বরে। সেখান থেকে পয়লা নম্বরে উঠে আসায় বৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৩৭৫%। ২০১৭-এ চার হাজারের কম মধ্যবিত্ত ফ্ল্যাট বিক্রি করেছে কলকাতা। ২০১৬-র ৭৪৭৩-র তুলনায় ৪৮% কম।
এই সমীক্ষায় প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে যথাক্রমে মহারাষ্ট্রের দুই শহর মুম্বই ও পুণে। নতুন আবাসন আইন তৈরি করে বাজারের আস্থা ফেরাতে প্রথম এগিয়েছিল মহারাষ্ট্রই। আর সেই পদক্ষেপ কাজে দিয়েছে বলেই মনে করছে শিল্পমহল। কুশম্যান অ্যান্ড ওয়েকফিল্ড ইন্ডিয়ার প্রধান অংশুল জৈনের দাবি, আইনে ভরসা রেখে কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ক্রেতারাও।
নতুন প্রকল্প ঘোষণাতেও পিছিয়ে পড়েছে কলকাতা। ২০১৬-র তুলনায় ২০১৭-এ ৪৫% কম প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে। ১২,৮৯৯টি প্রকল্পের বদলে ৭১২৭টি নতুন প্রকল্প চালু হয়েছে। সারা দেশেই নতুন প্রকল্পে বৃদ্ধির হার নেতিবাচক। ২০১৬-র তুলনায় ২০১৭-এ তা ৩৫% কম। কলকাতার মতোই দিল্লি, বেঙ্গালুরু, চেন্নাই ও হায়দরাবাদে নতুন প্রকল্পের সংখ্যা কমেছে। মুম্বইয়ে কমলেও তার অঙ্ক অবশ্য সামান্য।
নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের দাবি, সব রাজ্যে নতুন আবাসন আইন চালু হয়ে গেলে বাড়বে স্বচ্ছতা। সেই সঙ্গে বাড়বে বাজারও। তার হাত ধরে চলতি বছরে কম দামি প্রকল্প ঘোষণার সংখ্যা বেড়ে যাবে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের।