প্রতীকী ছবি
লকডাউন কাটিয়ে যখন ধীরে ধীরে ছন্দে ফেরার চেষ্টা করছে আর্থিক কর্মকাণ্ড, রাস্তায় নামছেন মানুষ, ঠিক তখনই মাত্র দু’দিনে লিটারে এক টাকারও বেশি দাম বাড়ল পেট্রল, ডিজেলের। রবিবারের ৫৯ পয়সার পরে সোমবার কলকাতায় পেট্রল ৫৭ পয়সা বেড়েছে। হয়েছে ৭৪.৪৬ টাকা। ডিজেল ৫৫ পয়সার পরে আজ ৫৪ পয়সা বেড়ে ৬৬.৭১ টাকা। করোনার আবহে রুজি-রোজগারে ধাক্কা খাওয়া সাধারণ মানুষ যা নিয়ে উগরে দিতে শুরু করেছেন তীব্র ক্ষোভ।
অনেকের অভিযোগ, লকডাউনের মধ্যে যখন বিশ্ব বাজারে তেলের দাম রেকর্ড তলানি ছুঁয়েছিল, তখন দেশে তেলের দর কমানো দূর অস্ত্, ৮২ দিন ধরে একই রেখেছিল (পশ্চিমবঙ্গ-সহ কিছু রাজ্য করে ছাড় তোলায় ১ এপ্রিল দাম বাড়ে) তেল সংস্থাগুলি। বরং গত মাসে লিটারে পেট্রলে ১০ টাকা ও ডিজেলে ১৩ টাকা উৎপাদন শুল্ক ও সেস বাড়িয়ে কোষাগার ভরেছে কেন্দ্র। যার জের বহন করতে হয়েছে তেল সংস্থাকে। একাংশের ক্ষোভ, মানুষের ঘরবন্দি থাকার সুযোগ নিয়ে সেই সময়ে দাম কমানোর পথ খোলা হয়নি। আর যখন ফের কাজকর্ম শুরু হচ্ছে, তখন দর বাড়িয়ে মানুষকে চাপে ফেলার রাস্তা খোলা হল।
সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, ফের প্রমাণ হল, বিশ্ব বাজারে তেলের দর বাড়লে, দেশে তার দাম বাড়ে সঙ্গে সঙ্গে। কিন্তু দাম কমলে, উল্টোটা হয় না। ওপেক তেলের উৎপাদন আরও বেশি দিন ধরে ছাঁটার পথে হাঁটায় বিশ্ব বাজারে তেল আরও দামি হওয়ার আশঙ্কা।
কেউ আবার বলছেন, এমনিতেই রাস্তায় গণপরিবহণ সেই অর্থে নেই। বাস মালিকেরা চাইছেন ভাড়া বাড়ুক। এ অবস্থায় তেলের দাম বাড়ায় সেই দাবি আরও জোরদার হবে নাকি? তখন মানুষই বা যাবেন কোথায়? যাঁদের আয় ধাক্কা খেয়েছে। তার উপরে আমপানে রাজ্যে ফসলের ক্ষতি হয়েছে। ফলে ইতিমধ্যেই কিছুটা ঊর্ধ্বমুখী খাদ্যশস্য, আনাজের দাম। ডিজেলের দর বৃদ্ধি তাকে ঠেলে তুললে আমজনতার বোঝা বাড়বে বই কমবে না বলেও ক্ষোভ প্রকাশ করছেন অনেকে।
খবর, সম্প্রতি তেল সংস্থাগুলি বলেছিল, জোগান খরচ ও বিক্রির মধ্যে প্রায় ৪-৫ টাকা ঘাটতি। তা মেটাতে প্রায় দু’সপ্তাহ দিনে লিটারে ৪০-৫০ পয়সা করে দাম বাড়াতে হবে। কেন্দ্র আপত্তি তোলে। অথচ দু’দিনে দুই জ্বালানি ৫০ পয়সার বেশিই বাড়ল।