— ফাইল ছবি
করোনা ভাইরাসের নতুন ‘স্ট্রেন’ নিয়ে ব্রিটেনের কাঁপুনি ছড়িয়ে পড়ল ভারতেও। নাগাড়ে উঠে ৪৭ হাজারের দোরগোড়ায় দাঁড়ানো সেনসেক্সে ধস নামল প্রায় ১৪০৭ পয়েন্টের (৩%)। দিনের শেষে তা থামল ৪৫,৫৫৩.৯৬ অঙ্কে। মুছে গেল লগ্নিকারীদের ৬.৫৯ লক্ষ কোটি টাকার শেয়ার সম্পদ। নিফ্টি-ও প্রায় ৪৩২ পয়েন্ট নেমে (৩.১৪%) দাঁড়াল ১৩,৩২৮.৪০-তে।
বাজার মহলের দাবি, ব্রিটেনে ভাইরাসের নতুন ‘স্ট্রেনটির’ ৭০% বেশি সংক্রমণ ক্ষমতা, বিপদ রুখতে লন্ডন-সহ নানা অঞ্চলে ফের কড়া লকডাউন ও ভারত-সহ বিভিন্ন দেশে ব্রিটেন সফর ও উড়ান সংযোগে নিষেধাজ্ঞাই মূলত পতনে দায়ী। কারণ, এতে ধাক্কা খেয়েছে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রত্যাশা। আশঙ্কা বেড়েছে আমেরিকায় ফাইজ়ারের করোনা টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াতেও। ফলে উঁচু বাজারে অনেকেই শেয়ার বেচে মুনাফা তুলতে দেরি করেননি। যে কারণে পড়েছে বিশ্বের অন্যান্য সূচকও। উল্টে সোনা ও ডলারে লগ্নি সরায় সেগুলির দাম বেড়েছে। ভারতে ১ ডলার ২৩ পয়সা উঠে হয় ৭৩.৭৯ টাকা।
বিশেষজ্ঞেরা অবশ্য বলছেন, টানা উত্থানের পরে এমন সংশোধন হওয়ারই ছিল এবং তা হওয়া উচিতও। বিশেষত ভারতে শেয়ারের দাম যতটা বাড়া উচিত ছিল, তার থেকে যেহেতু অনেক বেশি বেড়ে রয়েছে। বিএনপি পারিবাসের শাখা শেয়ারখানের গবেষণা বিভাগের প্রধান সঞ্জীব হোতা বলেন, ‘‘বাজারে আরও অস্থিরতা দেখব আমরা। তবে উঁচু বাজারে সংশোধনের পতন স্বাস্থ্যকর। ভাল শেয়ার কেনার সুযোগ।’’
ক্যালকাটা স্টক এক্সচেঞ্জের প্রাক্তন সভাপতি কমল পারেখও বলছেন, বহু দিন ধরে সংশোধন ছাড়াই বাড়ছে সূচক। তার উপরে ইউরোপের বেশ কিছু অঞ্চলে ফের অতিমারির আক্রমণ ও লকডাউন। এর প্রভাবই পড়েছে ভারতে। আরও নামতে পারে বাজার। তবে দেকো সিকিউরিটিজ়ের কর্ণধার অজিত দে-র দাবি, ‘‘বড়দিন, নতুন বছর উপলক্ষে ডিসেম্বরের এই সময় আমেরিকা, ইউরোপে ছুটি শুরু হওয়ায় বিদেশি লগ্নি সংস্থাগুলির দফতর বন্ধ থাকে। ফলে ভাটা পড়ে তাদের লগ্নিতেও। এই পতনে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’’ পরিসংখ্যানও বলছে, যে বিদেশি লগ্নি সংস্থার বিনিয়োগে ভারতের বাজার উঠছিল, এ দিন তারাই প্রায় ৩২৩.৫৫ কোটি টাকার পুঁজি তুলে নিয়েছে।
বিএনকে ক্যাপিটাল মার্কেটসের এমডি অজিত খণ্ডেলওয়ালের মন্তব্য, ভারতের বাজারের ক্ষেত্রে এটা শাপে বর হয়েছে। এই সংশোধন সূচককে নতুন শক্তিতে ছোটার ক্ষমতা দেবে।