— ফাইল চিত্র
বিল পেশের আগে তা খুঁটিয়ে পড়তে বাড়তি দু’দিন সময় চেয়েছিলেন বিরোধীরা। স্পিকার সেই কথা রাখার পরে অবশেষে বৃহস্পতিবার লোকসভায় পেশ হল ‘শিল্পে মালিক-শ্রমিক সম্পর্ক বিধি’।
এ দিন এই বিষয়ে আলোচনা হয়নি। কিন্তু সম্পর্ক-বিধির প্রাথমিক খসড়া সামনে আসার পর থেকেই তার নানা বিষয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। দাবি জানাচ্ছে বিলটিকে সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে পাঠানোর। সিটু নেতা তপন সেনের অভিযোগ, ‘‘এখন একশো বা তার বেশি কর্মীর সংস্থায় ছাঁটাইয়ের জন্য সরকারি অনুমতি লাগে। বিলে তা বাড়ানো হয়নি। কিন্তু পরে যাতে সরকার ইচ্ছে মতো সংসদকে এড়িয়ে ওই সংখ্যার হেরফের করতে পারে, সেই রাস্তা খোলা রাখা হয়েছে।’’
কেন্দ্রের দাবি, নতুন বিধি কার্যকর হলে স্থায়ী কর্মীদের সঙ্গে ঠিকা কর্মীদের সুযোগ-সুবিধার ফারাক কমবে। ইপিএফ-সহ বিভিন্ন সুবিধা পাবেন ঠিকা কর্মীরা। কিন্তু কর্মী সংগঠনগুলির আশঙ্কা, আসলে অনেক সহজে স্বল্প সময়ের জন্য ঠিকা কর্মী নিয়োগ এবং তাঁদের ছাঁটাইয়ের দরজা খুলে যাবে সংস্থার সামনে। সঙ্ঘ ঘনিষ্ঠ শ্রমিক সংগঠন বিএমএসের সাধারণ সম্পাদক ব্রিজেশ উপাধ্যায়ের কথায়, ‘‘আগে এমন ঠিকা কর্মী নিয়োগের জন্য ঠিকাদারের উপরে নির্ভর করতে হত। এখন সংস্থাই সরাসরি তিন-ছ’মাসের জন্য ঠিকায় কর্মী নিয়োগ করতে পারবে। এটি স্বাগত। কিন্তু এর ফলে যদি স্থায়ী চাকরির সংখ্যা কমে ঠিকায় নিয়োগের প্রবণতা বাড়ে, তবে চিন্তার বিষয়।’’
বিশ্বায়নের জমানায় সরকারি ক্ষেত্র বাদে স্থায়ী চাকরি এখন এমনিতেই সে ভাবে নেই। তপনের আশঙ্কা, তার উপরে এই বিধি পাশ হলে ঠিকা কর্মী নিয়োগ বাড়বে সর্বত্র। উল্লেখ্য, ঠিকা কর্মীর চুক্তির পুনর্নবীকরণ না-হলে তাকে ছাঁটাই হিসেবে না-দেখার কথাই রয়েছে প্রস্তাবিত বিলে। বলা হয়েছে, অন্তত ৭৫% কর্মীর সমর্থন থাকলে, তবেই ইউনিয়ন হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়ার কথা। বিলের খসড়ায় ধর্মঘটের অধিকারকে যে ভাবে খর্ব করার কথা লেখা ছিল, তাতেও তীব্র আপত্তি সিটুর। তপনের দাবি, বলা হচ্ছে জেল-জরিমানার কথা। এতে প্রশ্নের মুখে ধর্মঘটের অধিকারই।