ক্যাপশন- কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট কলকাতার (আইআইএমসি) সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আজ মুখ্য অতিথি হয়ে আসছেন প্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তনী, দেশের মুখ্য আর্থিক উপদেষ্টা কৃষ্ণমূর্তি সুব্রহ্মণ্যন। এমন মঞ্চে মুখ্য অতিথিকে প্রশ্ন করা যায় না। তবু এই করোনার আবহে দাঁড়িয়ে হাজারো জিজ্ঞাসার জবাব খুঁজতেই তাঁর ভাষণ শোনার অপেক্ষায় অধীর আইআইএমের পড়ুয়ারা। সেখানে এক দিকে যেমন রয়েছে সংক্রমণ যুঝতে কেন্দ্রের ভাবনার হদিশ পাওয়া, তেমনই দেশের দুর্বল স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে মেরামত করতে দরকার পড়লেও কেন পিএম কেয়ার্স তহবিলের টাকার হিসেব দিচ্ছে না সরকার তার সুলুকসন্ধান। অনেকেরই মনে আরও এক বহুল চর্চিত প্রশ্ন, অন্য দেশ অনেক বেশি সরাসরি নগদ ত্রাণ দিয়েছে, তা হলে ভারত কেন ঋণে জোর দিল?
সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, সমাবর্তনে প্রশ্ন করা গেলে বিড়ম্বনায় পড়তে হত
সুব্রহ্মণ্যনকে। জোর বাঁচা বেঁচে গেছেন। পড়ুয়াদের একাংশ বলছেন, অতিমারির মধ্যে কোনটা জরুরি জীবন না জীবিকা, সেটাও কৃষ্ণমূর্তির মুখ থেকে শুনতে চান তাঁরা। কারণ, জানা দরকার দু’টির মধ্যে বাছতে হলে, তার পথ কী বলে ভাবছে সরকার।
করোনার ধাক্কায় অনলাইনেই হবে অনুষ্ঠান। তাতে যোগ দেওয়ার কথা সম্প্রতি নিজেই টুইট করে জানিয়েছেন কৃষ্ণমূর্তি। কী বার্তা পড়ুয়ারা আশা করছেন প্রাক্তনীর থেকে, এই প্রশ্নের উত্তরে এ বছর এমবিএ উত্তীর্ণ দীক্ষান্ত যাদবের জবাব, ‘‘সব থেকে দক্ষ ও স্বচ্ছ ভাবে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো গড়া জরুরি। অথচ পিএম কেয়ার্স তহবিলের হিসেব দিতে চাইছে না সরকার! ওই তহবিলের স্বচ্ছতা নিয়ে কৃষ্ণমূর্তির কী ভাবনা জানতে চাই।’’ আর এক ছাত্র সুধাংশ জয়ন্তের প্রশ্ন, ‘‘ব্রাজ়িল, দক্ষিণ আফ্রিকা কেন জিডিপির ১০%-১২% ত্রাণ দিল, কিন্তু ভারত গতবার মাত্র ২.২% খরচ করল?’’ এর কারণ হিসেবে ত্রাণের ৭% ঋণ ভিত্তিক সুবিধা বলে দাবি করলেও, কৃষ্ণমূর্তির মুখ থেকে ব্যাখ্যা চান তিনি। তাঁর আশা, চাহিদাই যখন মূল সমস্যা, তখন ঋণ ভিত্তিক প্রকল্প কী ভাবে কাজ করবে সেটা মুখ্য উপদেষ্টা নিশ্চয়ই বলবেন। সুধাংশ এও জানতে চান, চিনে বস্ত্র এবং চর্মশিল্পের মতো শ্রমনিবিড় শিল্পের লগ্নি ভারত কেন টানতে পারছে না, অথচ ভিয়েতনাম বা বাংলাদেশে তার বিস্তার ঘটছে।
দীক্ষান্ত ও তাঁর সহপাঠী বিদিশা শুনতে চান রাজকোষ ঘাটতির সঙ্কট মোকাবিলায় সুব্রহ্মণ্যনের ভাবনা। কেন্দ্রের বাড়তে থাকা ঋণ যখন দেশের ক্রেডিট রেটিং কমার আশঙ্কা বাড়াচ্ছে, তখন লগ্নি টানতে দেশের মূল্যায়ন বৃদ্ধির পদক্ষেপ জানতেও আগ্রহী তাঁরা। আর ঈশা মিত্তল বলছেন, ‘‘এই অন্ধকারাচ্ছন্ন সময়ে দেশে লকডাউন না-ডাকা বা টাস্ক ফোর্স না-গড়া নিয়ে কৃষ্ণমূর্তির মত কী। এই অবস্থায় কোন পথ কী ভাবে বাছতে হয়, ভবিষ্যতের ম্যানেজার হিসেবে জানতে চাই।’’
কৃষ্ণমূর্তির বার্তায় প্রশ্নের জবাব থাকে কি না, এখন সেটাই দেখার।