Jute Mill

পাটের অভাব ও করোনার ধাক্কা, বন্ধের মুখে রাজ্যের বহু চটকল

তবে আইজেএমএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়ার মতে, বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ সমস্যায় ফেলতে পারে চটকলগুলিকে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ এপ্রিল ২০২১ ০৫:২৮
Share:

ফাইল চিত্র।

ইতিমধ্যেই সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়েছে বজবজ জুটমিল। কর্মহীন হয়েছেন পাঁচ হাজারেরও বেশি কর্মী। বাজারে কাঁচা পাটের অভাব এবং করোনার দ্বিতীয় ঢেউ, এই জোড়া ধাক্কায় এ রাজ্যের আরও অনেক চটকলও বন্ধ হওয়ার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করল চট শিল্পমহল। তাদের দাবি, কাঁচামাল না-পাওয়ায় উৎপাদনই চালাতে পারছে না অনেকে। যেটুকু পাট মিলছে, আগুন দাম। এই অবস্থায় লাফিয়ে বাড়তে থাকা সংক্রমণ আরও ভয়াবহ করেছে পরিস্থিতিকে। সরকার অবিলম্বে কড়া হাতে পাট সরবরাহের ব্যবস্থা না-করলে ও সংক্রমণ রোখার দাওয়াই না-দিলে এ রাজ্যের অনেক চটকলের ঝাঁপ বন্ধ করা ছাড়া উপায় থাকবে না, হুঁশিয়ারি শিল্পের।

Advertisement

রবিবার চটকল মালিকদের সংগঠন ইন্ডিয়ান জুট মিলস অ্যাসোসিয়েশনের (আইজেএমএ) চেয়ারম্যান রাঘবেন্দ্র গুপ্ত বলেন, ‘‘৫-৭ লক্ষ বেল (১ বেল=৫০০ বস্তা) কাঁচ পাটের ঘাটতি আছে বাজারে। তার উপরে এক কুইন্টালের দাম ৮০০০ টাকারও বেশি। ভোট মেটার পরে বহু চটকলে উৎপাদন ছাঁটাই ও বন্ধ হতে পারে।’’ নাম প্রকাশে নারাজ চটশিল্পের এক প্রাক্তন কর্তার আশঙ্কা, ‘‘রাজ্যে ৬০টি চটকলের মধ্যে অন্তত এক তৃতীয়াংশ বন্ধের মুখে। কাঁচামালের জোগান বাড়াতে সরকার কড়া পদক্ষেপ না-করলে ভবিতব্য ওটাই।’’

কর্মী ইউনিয়নগুলির একাংশের অবশ্য অভিযোগ, কৃত্রিম ভাবে কাঁচা পাটের অভাব তৈরি করা হচ্ছে। ইনটাক অনুমোদিত ন্যাশনাল ইউনিয়ন অব জুট ওয়ার্কার্সের সেক্রেটারি জেনারেল গণেশ সরকার চটকল মালিকদের একাংশের উদ্দেশে তোপ দেগে বলেন, ‘‘চটের বস্তা তৈরিতে ব্যবহার না-করে কিছু অসাধু মিল মালিক পাট বাজারে বেচে দিচ্ছেন। আগে কম দামে কিনে মজুত করে এখন দাম বাড়ার পরে বিক্রি করে লাভ করছেন। কৃত্রিম ভাবে কাঁচামালের অভাব দেখিয়ে কিছু মিল বন্ধের চেষ্টা হচ্ছে।’’ জুট কমিশনার মলয় চক্রবর্তীর অবশ্য দাবি, ‘‘যাতে সবাই পায় তাই ইতিমধ্যেই চটকলে কাঁচ পাট মজুতের সীমা বাঁধা হয়েছে। যা এক মাসের গড় চাহিদার সমান।’’

Advertisement

তবে আইজেএমএ-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সঞ্জয় কাজারিয়ার মতে, বাড়তে থাকা করোনা সংক্রমণ সমস্যায় ফেলতে পারে চটকলগুলিকে। এখনই তা রুখতে কঠোর পদক্ষেপ না-করলে
পরিস্থিতি আয়ত্তে রাখা কঠিন হবে। কারণ, সেগুলি খুব ঘিঞ্জি এলাকায় অবস্থিত। ফলে দ্রুত সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা। করোনার প্রথম দফায় প্রায় মাস তিনেক বন্ধ ছিল রাজ্যের চটকলগুলি। বর্তমান আইজেএমএ চেয়ারম্যানকে লেখা চিঠিতে কাজারিয়া বলেছেন, ‘‘এখনই সক্রিয় না-হলে এ বছর পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।’’

সম্প্রতি বজবজ জুটমিলের কর্তৃপক্ষের দাবি ছিলে, বহু চেষ্টা সত্ত্বেও উৎপাদন ক্ষমতা ও মান দিনের পর দিন ধরে পড়ছিল। বাড়ছিল শ্রমিকদের অনুপস্থিতি। সে কারণেই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত। তখনও শ্রমিকেরা অভিযোগ তোলেন, কাঁচা পাটের দাম বৃদ্ধির পর থেকে নিচু মানের কাঁচামাল ব্যবহার এবং রক্ষণাবেক্ষণের ক্ষেত্রে কর্তৃপক্ষের গাফিলতিই পণ্যের মান ও উৎপাদন কমার আসল কারণ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement