মজুত পাটের হিসেব চাইলেন জুট কমিশনার।
খাদশস্য ভরার নিয়ম মেনে চাহিদা মতো চটের বস্তা চাইছে কেন্দ্র। অথচ বহু চটকলের অভিযোগ, পাট বাড়ন্ত। ফলে বস্তা তৈরিই করা যাচ্ছে না। কাঁচাপাট না-পেয়ে রাজ্যের একটি চটকল আপাতত উৎপাদন বন্ধ করেছে বলেও সূত্রের খবর। এই পরিস্থিতিতে পাটের বেআইনি মজুত রুখতে সংশ্লিষ্ট সমস্ত ডিলার, ব্যবসায়ী এবং এজেন্সির কাছে কত পাট মজুত রয়েছে, গুদাম ধরে ধরে তার হিসেব চেয়ে পাঠাল জুট কমিশনার। সূত্রের দাবি, কাঁচা পাটের কারবারিদের থেকে সেই তালিকা পাওয়ার পরে সরেজমিনে তদন্ত করতে জুট কমিশনারের দফতর থেকে বিভিন্ন গুদামেও যাওয়া হবে।
চটকল মালিকদের বড় অংশের অভিযোগ, বেশি মুনাফার লোভে এক শ্রেণির ব্যবসায়ী কাঁচাপাট বেআইনি ভাবে গুদামে জমা করে বাজারে কৃত্রিম উপায়ে পাটের ঘাটতি তৈরি করছে। ফলে এক দিকে বহু মিল পাট না-পাওয়ায় বস্তা তৈরি করতে পারছে না। অন্য দিকে চাহিদা ও জোগানে ফারাকের ফলে দাম বাড়ছে পাটের। ফলে চড়ছে চটের বস্তার দামও। সে ক্ষেত্রে অতিরিক্ত খরচের দায় বহন করতে হবে কেন্দ্রীয় বস্ত্র মন্ত্রককে। ফলে কাঁচাপাটের বেআইনি মজুত নিয়ে চিন্তায় মন্ত্রকের কর্তারা। পরিস্থিতি দ্রুত স্বাভাবিক করতে কড়া পদক্ষেপ শুরু করেছে জুট কমিশনারের অফিস।
ডিসেম্বর থেকেই প্রতি সপ্তাহে বা মাসে পাট ব্যবসায়ীদের নিজস্ব বা অন্যের মজুত করা পাটের হিসেব জুট কমিশনারের অফিসে জানাতে হবে বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। জুট কমিশনার মলয়চন্দন চক্রবর্তী জানান, বেআইনি মজুতের বিরুদ্ধে সব রকম পদক্ষেপ করা হবে।
সাধারণত চাষিদের কাছ থেকে বিভিন্ন হাত ঘুরে কাঁচাপাট আসে চটকলে। পাট শিল্প মহলের একাংশের দাবি, এ বছর এমনিতেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় উৎপাদন মার খেয়েছে। তার উপরে চলছে বেআইনি মজুত। ফলে চটকলগুলিতে পাটের আকাল দেখা দিয়েছে। যার প্রভাব পড়ছে বস্তা তৈরিতে। সারা দেশে যতটা কাঁচাপাট লাগে, তার ৬০ শতাংশের বেশি জোগান দেয় পশ্চিমবঙ্গ।
দেশে চালু চটকলের সংখ্যাও সব থেকে বেশি এ রাজ্যেই। স্বাভাবিক ভাবেই চটের বস্তা কিনতে কেন্দ্রীয় বরাতের সিংহভাগই পায় পশ্চিমবঙ্গের চটকলগুলি।