স্বাস্থ্য বিমা থাকা সত্ত্বেও অনেকে প্রয়োজনের সময় হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে নগদহীন (ক্যাশলেস) চিকিৎসার সুবিধা পান না। প্রতীকী চিত্র।
স্বাস্থ্য বিমা থাকা সত্ত্বেও অনেকে প্রয়োজনের সময় হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে নগদহীন (ক্যাশলেস) চিকিৎসার সুবিধা পান না। কারণ, জরুরি পরিস্থিতিতে ভর্তি হতে বাধ্য হওয়া জায়গায় হয়তো তাঁর বিমা প্রকল্প অনুযায়ী নগদহীন চিকিৎসার পাওয়ার ব্যবস্থা নেই। ফলে বছর বছর প্রিমিয়াম গোনার পরেও তখন ঘরের টাকা বার করা ছাড়া উপায় থাকে না। পরে তা ফেরত পাওয়া গেলেও, অনেক সময়ই সেই মুহূর্তে খরচ জোগাড় করতে প্রাণান্তকর অবস্থা হয় বহু মানুষের। এই পরিস্থিতি বদলাতে উদ্যোগী হয়েছে বিমা নিয়ন্ত্রক আইআরডিএ এবং সাধারণ বিমা সংস্থার সংগঠন জেনারেল ইনশিয়োরেন্স কাউন্সিল। দেশের বাজারে চালু থাকা সমস্ত স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্পের আওতাভুক্ত কোনও গ্রাহক যাতে নগদহীন চিকিৎসার সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন, তা নিশ্চিত করতে কোমর বেঁধেছে তারা। সেই লক্ষ্যে এক ছাতার তলায় আনা হচ্ছে সব হাসপাতাল ও নার্সিংহোমকে।
বুধবার কলকাতায় বণিকসভা অ্যাসোচ্যামের এক সভার শেষে জেনারেল ইনশিয়োরেন্স কাউন্সিলের সেক্রেটারি জেনারেল ইন্দ্রজিৎ সিংহ বলেন, “ব্যবস্থাটি কার্যকর হলে কাউকে আর নগদহীন চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে হবে না।’’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করে ন্যাশনাল ইনশিয়োরেন্সের জেনারেল ম্যানেজার টি বাবু পল বলেন, দেশে প্রায় হাজার ছয়েক হাসপাতাল এবং নার্সিংহোম। এখন সাধারণ বিমা সংস্থাগুলি আলাদা আলাদা ভাবে একাংশের সঙ্গে গ্রাহকদের নগদহীন চিকিৎসার সুবিধা দিতে চুক্তি করে। ফলে অনেকগুলি ওই চুক্তির বাইরে থাকে। অনেক সময়েই এমন হয় যে, বিমাকারী জরুরি অবস্থায় স্থানীয় হাসপাতাল বা নার্সিংহোমের সঙ্গে তাঁর বিমা সংস্থার চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও সেখানে ভর্তি হতে বাধ্য হন। সে ক্ষেত্রে তাঁকে প্রথমে নগদ টাকা দিয়েই চিকিৎসা করাতে হয়। পরে খরচের বিল জমা দিয়ে টাকা ফেরত (রিইমবার্সমেন্ট) পান। নতুন ব্যবস্থা চালু হলে সমস্ত সাধারণ বিমা সংস্থার সঙ্গে প্রতিটি হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমকে যুক্ত করা হবে। তখন যে কোনও জায়গায় ভর্তি হয়েই গ্রাহক ক্যাশলেসের সুবিধা পাবেন।
বাবুর দাবি, নতুন ব্যবস্থা কার্যকর করতে দেশের হাসপাতাল এবং নার্সিংহোমগুলির তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। ধীরে ধীরে সবক’টিকে এতে যুক্ত করা হবে এবং প্রতিটির সঙ্গে বিমা সংস্থাগুলির চুক্তির ব্যবস্থা করা হবে। সভায় উপদেষ্টা সংস্থা প্রাইসওয়াটার হাউসের বিমা এবং আনুষঙ্গিক ব্যবসা সংক্রান্ত বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পার্টনার অমিত রায় বলেন, ২০৪৭-এর মধ্যে দেশের সকলকে বিমার আওতায় আনতে হলে হাতিয়ার করতে হবে প্রযুক্তিকেই।
এ দিকে, ইউনাইটেড ইনশিয়োরেন্সের ডিজিএম এনসি মণ্ডল বলেন, বিমাকৃত বহু বিষয়ের ক্ষেত্রে ঝুঁকি সামলানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়টি অবহেলিত হচ্ছে। যার কারণ, বিমা ব্যবসায় প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি। বিমার অযোগ্য প্রকল্পকেও সেই সুবিধা দিতে হচ্ছে। এতে বিমার প্রকৃত উদ্দেশ্য মার খেতে পারে বলে আশঙ্কা তাঁর।