প্রতীকী ছবি।
পিপিএফ, এনএসসি, কিসান বিকাশপত্র-সহ সমস্ত স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে আরও সুদ কমার আশঙ্কা দানা বাঁধল বৃহস্পতিবার, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ঋণনীতি ঘোষণার সময়। যেখানে ঋণনীতি কমিটি স্পষ্ট জানাল, ‘‘এই মুহূর্তে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলিতে সুদের হার ‘পরিবর্তন’ করা জরুরি।’’ সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের তরফে এটা সুদ কমানোরই জোরালো সুপারিশ। সম্প্রতি স্বল্প সঞ্চয়ের সুদ বাজারের (মূলত সরকারি ঋণপত্রের সুদ অনুযায়ী) সঙ্গে তাল মিলিয়ে হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেছেন আর্থিক বিষয়ক সচিব অতনু চক্রবর্তীও। ফলে সংশ্লিষ্ট মহলের ধারণা, আগামী এপ্রিলে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ কমার ইঙ্গিত স্পষ্ট। জানুয়ারি-মার্চ, এই তিন মাসে যে হার বদলায়নি।
ইউনাইটেড ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়ার (ইউবিআই) প্রাক্তন সিএমডি ভাস্কর সেন বলছেন, চাহিদা বাড়িয়ে অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে এই মুহূর্তে ব্যাঙ্ক ঋণে সুদ কমা জরুরি। তবেই তো শিল্প কম খরচে লগ্নির সুযোগ পাবে। মানুষ ধার নিয়ে কেনাকাটা বাড়াতে পারবেন। কিন্তু স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পে সুদ না-কমলে ব্যাঙ্ক তার আমানতে সুদ কমাতে পারবে না। কারণ, তাতে গ্রাহকেরা স্বল্প সঞ্চয়ে বেশি ঝুঁকলে, ব্যাঙ্ক আমানতের পরিমাণ কমে যাবে। অথচ আমানতে সুদ হিসেব দেওয়া খরচ কমাতে না-পারলে, ঋণে কম সুদের সুবিধা দিতে পারবে না ব্যাঙ্ক। তাঁর দাবি, সে কথা ভেবেই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের এই বার্তা। তবে ভাস্করবাবুর মতো অনেকেই বলছেন, একেই মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলায় সাধারণ মানুষের খরচ বাড়ছে। অর্থনীতি অনিশ্চিত। চাকরি-বাকরি অসুরক্ষিত। তার উপরে ব্যাঙ্ক জমায় কম সুদের জমানা চলছে। এখন স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ আরও কমলে নিঃসন্দেহে আর্থিক নিরাপত্তা ধাক্কা খাবেন সাধারণ মানুষ। সব থেকে বেশি আর্থিক চাপে পড়বেন সুদ নির্ভর অসংখ্য মানুষ।
একাংশের প্রশ্ন, পরিসংখ্যানেই যেখানে স্পষ্ট দেশে পারিবারিক সঞ্চয় প্রায় আট বছরের তলানিতে, সেখানে স্বল্প সঞ্চয়ে সুদ কমলে তা ভাল হবে কি? বিশেষত গ্রামাঞ্চলের মানুষের রোজগারও যেখানে ধাক্কা খেয়েছে।