জানুয়ারিতে শিল্প বৃদ্ধি ৫.২% -এ দাঁড়াল। প্রতীকী ছবি।
গত ডিসেম্বরে তার আগের মাসের ৭.৩ শতাংশের নিরিখে শ্লথ হয়ে শিল্প বৃদ্ধি হয়েছিল ৪.৭%। জানুয়ারিতে এর পুনরাবৃত্তি হল না। উৎপাদন একটু হলেও বাড়ল। গত অর্থবর্ষের একই সময়ের তুলনায় এগিয়ে দাঁড়াল ৫.২%। তবে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ১০ মাসে (এপ্রিল-জানুয়ারি) বৃদ্ধির হার গত অর্থবর্ষের ওই সময়ের ১৩.৭% থেকে কমে হল ৫.৪%। সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশের মতে, আর্থিক কর্মকাণ্ড পুরোপুরি খুলে যাওয়ায় উৎপাদনে গতি ফিরছে। তবে ৫.২% প্রত্যাশার থেকে কম। যা অর্থনীতিতে চাহিদা ঢিমে থাকারই ইঙ্গিত। তাদের দাবি, গত বছর জানুয়ারিতে ২% শিল্প বৃদ্ধির নিচু ভিতের উপরে পা রেখে ৫% ছাড়িয়েছে। এই নিরিখে তা আরও একটু উঁচু হবে বলে আশা ছিল।
কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান বলছে, প্রধানত বিদ্যুৎ, খনন এবং কল-কারাখানায় উৎপাদন বৃদ্ধিই শিল্পোৎপাদন সূচককে ঠেলে তুলেছে। যা উন্নতির লক্ষণ। বিদ্যুতে বৃদ্ধি এক বছর আগের মাত্র ০.৯ শতাংশের তুলনায় এই জানুয়ারিতে ১২.৭% হওয়া শিল্পের ছন্দে ফেরার ইঙ্গিত। খননে বৃদ্ধি ৮.৮%, আগের বার ছিল ৩%। কল-কারখানায় উৎপাদন বেড়েছে গত বছরের ১.৯ শতাংশের তুলনায় ৩.৭%। সেখানে ব্যবহৃত মূলধনী পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধিও ১.৮ শতাশের তুলনায় এ বার ১১%। উৎপাদন বেড়েছে স্বল্পমেয়াদি ভোগ্যপণ্য ও নির্মাণ পণ্যের। ব্যতিক্রম টিভি, ফ্রিজ়ের মতো দীর্ঘ মেয়াদি ভোগ্যপণ্য। গত বার ৪.৪% সঙ্কুচিত হয়েছিল, এ বার ৭.৫%।
অর্থনীতির অধ্যাপক মহানন্দা কাঞ্জিলালের দাবি, কোভিড এবং যুদ্ধজনিত ধাক্কা সয়ে খুব ধীর গতিতে এগোচ্ছে অর্থনীতি। বিশ্ব অর্থনীতির শ্লথ গতি এবং মূল্যবৃদ্ধির প্রভাব শিল্প বৃদ্ধিতে স্পষ্ট। মূল্যবৃদ্ধির কারণেই স্থায়ী ভোগ্যপণ্যের চাহিদা কমেছে। মূলধনী পণ্য এবং কল-কারখানায় বর্ধিত উৎপাদন আশাব্যাঞ্জক। কিন্তু বেকারত্বের সমস্যা চাহিদা তৈরির পথে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যা পরোক্ষে শিল্পোৎপাদনকেও তেমন মাথা তুলতে দিচ্ছে না। আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, চড়া মূল্যবৃদ্ধি, সুদ এবং রফতানি বাজারে দুর্বল চাহিদা সত্ত্বেও ৫.২% শিল্প বৃদ্ধি তুলনায় ভাল। তবে বরাবর অর্থবর্ষের শেষ তিন মাসে শিল্প-সহ বিভিন্ন সূচককে মাথা তুলতে দেখা যায়। উৎপাদন ধারাবাহিক ভাবে বাড়লে নিশ্চিন্ত হওয়া যাবে।