নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার। —ফাইল চিত্র
লকডাউনের ধাক্কা কাটিয়ে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অনেকটাই ঘুরে দাঁড়িয়েছে ভারতীয় অর্থনীতি। জিডিপি বৃদ্ধির হারেও আশা জাগছে। কিন্তু করোনার নয়া স্ট্রেন ছড়ানোয় আবার নতুন করে উদ্বেগও রয়েছে। এমন পরিস্থিতির মধ্যেই নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের দাবি, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষের শেষেই কোভিডের আগের জায়গায় উঠে আসবে ভারতীয় অর্থনীতি।
২০২০-’২১ অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে জিডিপি সঙ্কোচনের হার পৌঁছে গিয়েছিল তলানিতে। রেকর্ড পতন হয়ে জিডিপির সঙ্কোচন বা ঋণাত্মক বৃদ্ধি হয়েছিল মাইনাস ২৩.৯ শতাংশ। তবে এই প্রথম ত্রৈমাসিক অর্থাৎ ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কার্যত পুরো সময়টাই দেশে চলেছে লকডাউন। তবে জুলাই-সেপ্টেম্বর ত্রৈমাসিকে জিডিপি সঙ্কোচন অনেকটাই কমে হয়েছিল মাইনাস ৭.৫ শতাংশ। তৃতীয় ত্রৈমাসিক এবং এর পর ক্রমেই এই হার ঊর্ধ্বমুখী থাকবে এবং প্লাসে পৌঁছে যাওয়া সময়ের অপেক্ষা বলেই মত অর্থনীতিবিদদের।
এক রকম সেই সুরেই সুর মিলিয়ে রাজীব কুমারের দাবি, আগামী অর্থবর্ষের শেষে অর্থাৎ ২০২২-এর মার্চেই কোভিডের আগের বৃদ্ধির হারে পৌঁছে যাবে অর্থনীতি। একটি সংবাদ সংস্থাকে রাজীব বলেছেন, ‘‘দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে আমাদের অর্থনীতি খুব দ্রুত গতিতে বাড়ছে। অধিকাংশ সমীক্ষাকারী সংস্থা ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির আগেকার পূর্বাভাস পাল্টাতে বাধ্য হয়েছে। ফলে আশা করা যায়, ২০২১-২২ অর্থবর্ষের শেষেই কোভিড পূর্ববর্তী অবস্থায় ফিরে আসবে ভারতীয় অর্থনীতি।’’ এমনকি, দেশের অর্থনীতি কোভিডের আগের পরিস্থিতির চেয়েও ভাল জায়গায় পৌঁছে যেতে পারে বলেও মত প্রকাশ করেছেন রাজীব।
কোভিডের আগেও যে অবশ্য ভারতীয় অর্থনীতি স্বস্তিদায়ক জায়গায় ছিল এমন নয়। বরং অর্থনীতির ঝিমুনি চলছিল। পর পর দু’টি ত্রৈমাসিকে ঋণাত্মক বৃদ্ধি হলে, তাকে মন্দা বলা হয়। কোভিডের আগে সেই পরিস্থিতি না হলেও ২০১৯-’২০ অর্থবর্ষের শেষ দু’টি ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার কমেছিল। যদিও ঋণাত্মক বৃদ্ধি হয়নি। উৎপাদন, পরিষেবা, ব্যাঙ্কিং, খুচরো বিপণন-সহ অর্থনীতির প্রায় সবক’টি সূচকই ছিল নিম্নমুখী। আর্থিক বৃদ্ধির হার ঘোরাফেরা করছিল ৭-এর কাছাকাছি।
কিন্তু রাজীব কুমারের মতে, ২০২১-’২২ অর্থবর্ষের শেষে জিডিপি বৃদ্ধির হার দুই অঙ্কে অর্থাৎ ১০ এর উপরেও পৌঁছে যেতে পারে। কোভিডকালে ২০ লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার পরেও আরও এক দফা আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন নির্মলা সীতারামন। রাজীবের দাবি, ‘‘সরকারের এই একাধিক পদক্ষেপের ফলেই অর্থনীতিতে এই ঊর্ধ্বগতি।’’