অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ফাইল ছবি।
গত বুধবার বাজেট প্রস্তাবে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, বছরে রোজগার ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত হলে, নতুন বিকল্পে এক পয়সাও কর দিতে হবে না। অন্য বিকল্পে যে সুবিধা মেলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে। শুক্রবার কেন্দ্রীয় প্রত্যক্ষ কর পর্ষদের (সিবিডিটি) চেয়ারম্যান নিতিন গুপ্তের দাবি, বছরে কার্যত ৭.৫০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ব্যক্তিদেরও করের পরিমাণ হবে শূন্য। সেই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, নতুন বিকল্পটির সুবিধা করদাতাদের প্রতিটি শ্রেণির মধ্যে ছড়িয়ে পড়বে। কেন্দ্রের আশা, দারুণ সাড়া মিলবে এতে। তবে এ দিনও আয়কর ব্যবস্থাটির সমালোচনা করেছে আরএসএসের অর্থনৈতিক শাখা স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ (এসজেএম)। তাদের আশঙ্কা, করের বোঝা কমালেও সাধারণ মানুষের সঞ্চয়ে কোপফেলবে এটি।
এর আগে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা কংগ্রেস নেতা পি চিদম্বরমও আক্ষেপ করে বলেছিলেন, আয়করের দুই কাঠামো সংক্রান্ত ‘হট্টগোলে’ চাপা পড়ে যাচ্ছে উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে ব্যক্তিগত সঞ্চয়ের গুরুত্ব। এসজেএম আপত্তি করেছিল অতি ধনীদের সারচার্জ কমিয়ে করে সুবিধা দেওয়ায়।
যদিও বাজেটে আয়করের নতুন কাঠামোকে আকর্ষণীয় করে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন নির্মলা। ৩ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় পুরোপুরি কর শূন্য করেছেন। করের ধাপ বদলেছেন। জানিয়েছেন, এটিই হতে চলেছে প্রধান কর কাঠামো। কিন্তু এতে করছাড়ের সুবিধা না থাকায়, তার কার্যকারিতা এবং কেন্দ্রের প্রকৃত উদ্দেশ্য নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। এ দিন নিতিনের দাবি, ছাড়ের কোনও সুবিধা না থাকলেও কর ব্যবস্থাটিতে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত স্ট্যান্ডার্ড ডিডাকশন মিলবে। যাঁদের মোট আয় বছরে ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের কোনও কর দিতে হবে না। তাঁর ধারণা, “নতুন কর ব্যবস্থার আওতায় আসতে চাকরিজীবীরা বিশেষ ভাবে আগ্রহী হবেন।’’
বাজেটে বলা হয়েছিল, উৎসমূলে কাটা কর বা টিডিএস নিয়ে জমে থাকা আবেদনগুলির দ্রুত মীমাংসা করার ব্যবস্থা করা হবে। সেই অনুযায়ী এ দিন কর পর্ষদ জানিয়েছে, এই প্রস্তাব কার্যকর করার জন্য তারা খুব শীঘ্রই প্রকল্প চালু করবে। এসজিএম অবশ্য আশঙ্কা প্রকাশ করে বলে, কয়েকটি স্বল্প সঞ্চয়-সহ বেশ কিছু প্রকল্পে এখন টাকা জমা রাখলে আয়কর ছাড় পাওয়া যায়। নতুন বিকল্পে ছাড়ের সুযোগ থাকবে না বলে অনেকের সেগুলিতে টাকা জমানোর তাগিদও থাকবে না। কিন্তু এতে আখেরে ক্ষতি হবে করদাতাদেরই।