কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। ফাইল চিত্র।
চড়া দামের কামড় ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে সাধারণ গৃহস্থ ও প্রবীণদের। মূলত এই অংশের মানুষদের দিকে তাকিয়েই বাজেটে স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প নিয়ে কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ ঘোষণা করল মোদী সরকার।
বুধবার কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের ঘোষণা, মহিলাদের জন্য ‘মহিলা সম্মান বচত পত্র’ নামে একটি এককালীন স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্প আনা হচ্ছে। দু’বছর মেয়াদি প্রকল্পটিতে স্থায়ী সুদের হার ৭.৫%। লগ্নি করা যাবে সর্বোচ্চ ২ লক্ষ টাকা। তবে মেয়াদ শেষের আগে আংশিক আমানত তোলা যাবে। ২০২৫ সালের মার্চ পর্যন্ত খোলা থাকবে প্রকল্পটি। খাতা খুলতে হবে ওই সময়ের মধ্যে।
সংশ্লিষ্ট মহলের বক্তব্য, মোদী সরকারের ঘোষিত ‘অমৃতকাল’-এর এটিই প্রথম বাজেট। আবার ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে শেষ পূর্ণাঙ্গ বাজেটও এটি। চলতি বছর ন’টি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচন এবং পরের বছরের লোকসভা ভোটের দিকে তাকিয়ে দলিত, জনজাতির মানুষদের পাশাপাশি মহিলাদের ভোটকে বহু দিনই পাখির চোখ করেছে বিজেপি। ঘোষিত প্রকল্পটিও সে দিকে চোখ রেখেই। তার উপরে জানুয়ারি থেকে অন্য কয়েকটি স্বল্প সঞ্চয়ে কেন্দ্র সুদ বাড়ালেও পিপিএফের মতো জনপ্রিয় করসাশ্রয়ী প্রকল্পকে সেই তালিকায় না রাখা করদাতাদের একাংশকে ক্ষুব্ধ করেছে। যাঁদের একাংশও মধ্যবিত্ত চাকরিজীবী মহিলা।
মূল্যবৃদ্ধি বড় ধাক্কা দিয়েছে অবসরপ্রাপ্ত সুদ নির্ভর মানুষদেরও। এ দিন নির্মলা জানান, প্রবীণদের সঞ্চয় প্রকল্প ‘সিনিয়র সিটিজ়েন্স সেভিংস স্কিম’-এ আমানতের ঊর্ধ্বসীমা ১৫ লক্ষ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ লক্ষ টাকা হতে চলেছে। উল্লেখ্য, স্বল্প সঞ্চয় প্রকল্পগুলির সুদ প্রত্যেক ত্রৈমাসিকে সংশোধন হয়। এখন প্রবীণদের এই প্রকল্পে সুদের হার ৮%। সেই সঙ্গে মাসিক আয় প্রকল্পেও জমার ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হয়েছে। এক জনের ক্ষেত্রে ৪.৫ লক্ষ থেকে বেড়ে তা হচ্ছে ৯ লক্ষ টাকা। যুগ্ম অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে ৯ লক্ষ থেকে ১৫ লক্ষ টাকা।
রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, রোজগেরে ও মধ্যবিত্তদের জন্য মোদী সরকার যে এ দিনই সব তাস হাত থেকে বার করে দিল, তা না-ও হতে পারে। লোকসভা ভোটের আগে এই অংশের মানুষদের জন্য আরও কয়েক দফা পদক্ষেপ করতে দেখা গেলেও অবাক হওয়ার থাকবে না। তবে এ দিনের স্বল্প সঞ্চয়ের ঘোষণাগুলির রাজনৈতিক গুরুত্ব যথেষ্ট বলেই মত তাঁদের।