টানা দু’টি ত্রৈমাসিকে জিডিপি কমায় জার্মানি আর্থিকমন্দায় পড়তেই নতুন করে উদ্বেগ মাথা তুলেছে ভারতের রফতানি শিল্প মহলে। প্রতীকী চিত্র।
টানা দু’টি ত্রৈমাসিকে জিডিপি কমায় জার্মানি আর্থিকমন্দায় পড়তেই নতুন করে উদ্বেগ মাথা তুলেছে ভারতের রফতানি শিল্প মহলে। তাদের আশঙ্কা, এতে জুতো, পোশাক, চামড়ার পণ্য-সহ এ দেশে তৈরি যে সমস্ত জিনিসের বড় বাজার রয়েছে সেখানে, সেগুলির বিক্রি কমতে পারে। যা আরও টেনে নামাবে সার্বিক রফতানিকে। দীর্ঘ দিন ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, চড়া মূল্যবৃদ্ধি এবং তাকে যুঝতে বিভিন্ন দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্কগুলির টানা সুদ বৃদ্ধি বেশ কিছু দিন যাবৎ বিশ্ব বাজারে চাহিদাকে ঢিমে করেছে। যার প্রভাব স্পষ্ট রফতানিতে। একাংশের সতর্কবার্তা, শুধু জার্মানিতে নয়, গোটা ইউরোপীয় ইউনিয়নে বিক্রি ধাক্কা খেতে পারে। কারণ, একে তো জার্মানি সেখানের বৃহত্তম অর্থনীতি। তার উপর আগেই মন্দা আক্রান্ত হয়েছে সেখানকার আরও কিছু দেশ।
তথ্য বলছে, ভারত থেকে গত অর্থবর্ষে (২০২২-২৩) যন্ত্র, স্মার্টফোন-সহ বৈদ্যুতিন পণ্য, জামাকাপড়, জৈবরাসায়নিক, জুতো, চামড়ার পণ্য, লোহা ও ইস্পাতের জিনিস, গাড়ির উপাদান-সহ নানা পণ্য কিনেছিল জার্মানি। মুম্বইয়ের রফতানিকারী ও টেকনোক্রাফ্ট ইন্ডাস্ট্রিজ়ের চেয়ারম্যান শরদ কুমার শরাফ বলেন, গত বার এ দেশ থেকে সেখানে রফতানি হয়েছিল ১০২০ কোটি ডলারের (প্রায় ৮৪,২১১ কোটি টাকা) পণ্য। এ বার কম হতে পারে। সব থেকে বেশি ধাক্কা খেতে পারে চামড়ার পণ্য, রাসায়নিক এবং হালকা এঞ্জিনিয়ারিং পণ্য।
আর্থিক উপদেষ্টা জিটিআরআই-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা অজয় শ্রীবাস্তবের দাবি, রফতানি কমতে পারে প্রায় ২০০ কোটি ডলার (প্রায় ১৬,৫১২ কোটি টাকা)। মন্দার প্রভাব সব থেকে প্রথমে পড়ে দৈনন্দিন ব্যবহারের জন্য জরুরি পণ্যে। ভারত থেকে স্মার্টফোন, জুতো, জামাকাপড়, চামড়ার জিনিস-সহ অনেক কিছুর বিক্রি ধাক্কা খেতে পারে সেখানে। বস্ত্র রফতানি শিল্পের সংগঠন এইপিসি-র চেয়ারম্যান নরেন্দ্র গোয়েন্কার মতে, ‘‘ভারতে বরাত কমবে। ব্যবসা ন্যূনতম ১০% কমতে পারে। জার্মানি থেকে এ দেশে লগ্নির প্রবাহেও ভাটা পড়তে পারে।’’ তবে শরাফের দাবি, জার্মানি ভারতের নবম বৃহত্তম লগ্নিকারী। বিনিয়োগে মন্দার প্রভাব না-ও পড়তে পারে। কারণ, বর্তমান অবস্থায় সে দেশের সংস্থাগুলি তুলনায় সস্তার বিকল্পের খোঁজ করবে।