প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। —ফাইল চিত্র।
লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটের বিপুল জয়ের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে সদ্য বুথ-ফেরত সমীক্ষায়। তবে সরকারি সূত্রের দাবি, উপর্যুপরি তৃতীয় বার ক্ষমতায় থাকলে কী করবেন তা অনেক আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। এর মধ্যে রয়েছে শ্রম আইন ও জমি অধিগ্রহণ সহজ করা এবং উচ্চ মানের প্রযুক্তি নির্ভর পণ্য উৎপাদনের জন্য যে সমস্ত যন্ত্রাংশ ও কাঁচামালের প্রয়োজন হয়, সেগুলির আমদানি শুল্ক কমানো। যদিও সংশোধিত শ্রম বিধি কার্যকরের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরে কিছু দিন আগেই আন্দোলনের আগাম হুঁশিয়ারি দিয়েছে ট্রেড ইউনিয়নগুলি। তাদের আশঙ্কা, এতে কর্মী ছাঁটাই বাড়বে।
ভারতকে সারা বিশ্বের উৎপাদন এবং রফতানি তালুক হিসেবে গড়ে তুলতে চাইছে মোদী সরকার। তার জন্য বেশ কয়েকটি শিল্প ক্ষেত্রে আনা হয়েছে উৎপাদনের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত ভর্তুকি (পিএলআই) প্রকল্প। যদিও এই সমস্ত ক্ষেত্রে অগ্রগতির চাকা এখনও মসৃণ ভাবে চলতে শুরু করেনি বলেই মনে করে সরকারের অন্দরমহল। সূত্রের খবর, সে কারণেই শ্রম, জমি এবং শুল্ক নীতিকে আরও শিল্পবান্ধব করে রূপায়ণের কথা ভেবে রেখেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। আর্থিক বিশ্লেষকদের বক্তব্য, ভারত এখন বড় দেশগুলির মধ্যে দ্রুততম বৃদ্ধির অর্থনীতি। কিন্তু প্রযুক্তি ক্ষেত্রের অগ্রগতি সত্ত্বেও ভাল মানের যথেষ্ট সংখ্যক কাজ তৈরি করা যায়নি। আইএমএফের ভারতীয় দফতরের প্রাক্তন প্রধান জশ ফেলম্যান বলছেন, ‘‘বেশি সংখ্যায় এবং ভাল মানের কাজ তৈরির চাবিকাঠি উৎপাদন ক্ষেত্রের উন্নতি।’’
অ্যাপল, গুগ্লের মতো আমেরিকার প্রথম সারির প্রযুক্তি সংস্থার জন্য যারা পণ্য তৈরি করে, তাদের লগ্নি টানার ক্ষেত্রে সফল হয়েছে ভারত। কিন্তু বিশ্ব ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যান বলছে, সারা বিশ্বের শিল্পোৎপাদনের মাত্র ৩% হয় ১৪০ কোটি জনসংখ্যার এই দেশে। চিনে সেখানে ২৪%। ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত এই ক্ষেত্রে নিজেদের অংশীদারিকে ৫ শতাংশে নিয়ে যেতে চায়। ২০৪৭ সালের মধ্যে পৌঁছতে চায় ১০ শতাংশে। এ ব্যাপারে অন্তত ১৫ জন আমলা, লগ্নিকারী, অর্থনীতিবিদ এবং ট্রেড ইউনিয়ন নেতার সাক্ষাৎকার নিয়েছে রয়টার্স। শ্রম নীতি, জমি অধিগ্রহণের সমস্যা এবং শুল্ক সংক্রান্ত সমস্যার কথা চিহ্নিত করেছেন তাঁরাই। অনেকে বলছেন, এখন যে সমস্ত সংস্থায় ১০০ জনের বেশি কর্মী রয়েছেন সেখানে ছাঁটাই করতে গেলে কর্তৃপক্ষকে রাজ্য সরকারের সম্মতি নিতে হয়। সেই সংখ্যা বাড়িয়ে ৩০০ করার জন্য আইন পাশ হলেও রাজ্যস্তরে এখনও তা রূপায়ণ হয়নি। জমি অধিগ্রহণ করতে গিয়েও সমস্যা হচ্ছে। প্রযুক্তি পণ্যের কাঁচামালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে ১০% করা হলেও ভিয়েতনামে তা ০%-৫%। ভারতে আমদানি শুল্ক চিনের চেয়ে বেশি। এগুলি কেন্দ্রের নজরে রয়েছে।