বাড়তি জমি বিক্রির ব্যাপারে বেঙ্গল কেমিক্যালস অ্যান্ড ফার্মাসিউটিক্যালসকে (বিসিপিএল) অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্র। তবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই সঙ্গেই সংস্থা বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার বিকল্পটি খতিয়ে দেখতে বলেছে। অবশ্য বেঙ্গল কেমিক্যালসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর পিএম চন্দ্রাইয়ার দাবি, সংস্থা ৬৩ বছর বাদে মুনাফায় ফিরেছে। তাই এই মুহূর্তে সংস্থা বেসরকারিকরণের প্রয়োজন নেই।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বেঙ্গল কেমের সঙ্গে হিন্দুস্তান অ্যান্টিবায়োটিক্সের জমি বিক্রিতেও সায় দেওয়া হয়েছে। আরও দুই ওষুধ সংস্থা ইন্ডিয়ান ড্রাগস এবং রাজস্থান ড্রাগস বন্ধের কথাও জানানো হয়েছে। নিলামের মাধ্যমে বিসিপিএল-সহ সংস্থাগুলির জমি বিক্রি করা হলে সেই টাকা স্বেচ্ছাবসর ও ঋণ মেটাতে ব্যবহার করা হবে।
জমি বিক্রির প্রসঙ্গে চন্দ্রাইয়া জানান, পানিহাটি কারখানার ৫ একর জমি বিক্রির জন্য বছর দু’য়েক আগেই কেন্দ্রের অনুমতি চান তাঁরা। ওই খাতে ৫০-৬০ কোটি টাকা পেলে তা সংস্থার হাল ফেরাতে ও কার্যকরী মূলধন জোগাড় করার কাজে লাগাতে চেয়েছিল সংস্থা। এ দিকে, দীর্ঘ ৬৩ বছর বাদে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ছ’মাসেই সংস্থা ১.১৬ কোটি টাকার মুনাফা করেছে। পুরো বছরে তা ৪-৫ কোটি টাকা ছোঁবে বলেই আশা কর্তৃপক্ষের। এই পরিপ্রেক্ষিতে, বেসরকারিকরণ নিয়ে চন্দ্রাইয়া বলেন, ‘‘সরকার কী করবে জানি না। তবে আমাদের সে প্রয়োজন নেই। আমরা চাই বেঙ্গল কেমিক্যালস রাষ্ট্রায়ত্তই থাকুক। বিলগ্নিকরণের দরকার নেই।’’
সংস্থার প্রতি বাঙালিদের বাড়তি টানের কথাও উল্লেখ করেন চন্দ্রাইয়া। বাঙালিকে ব্যবসামুখী করতেই আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায় ১৯০১ সালে প্রতিষ্ঠা করেন বেঙ্গল কেম। মানিকতলার প্রথম কারখানার পরে এ রাজ্যের পানিহাটি এবং মুম্বই ও কানপুরেও কারখানা খোলে সংস্থা। শেষ পর্যন্ত ১৯৭৭ সালে বিসিপিএলের রাশ হাতে নেয় কেন্দ্র। ১৯৮১ সালে এর জাতীয়করণ হয়। এক সময়ে যতটা নাম কুড়িয়েছিল সংস্থা, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে সেই গরিমা হারিয়ে ১৯৯২ সালে বিআইএফআরে চলে যায় তারা। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে মুনাফা করাটা যথেষ্ট কৃতিত্বের বলে দাবি চন্দ্রাইয়ার। উল্লেখ্য, পানিহাটি কারখানায় এখন তৈরি হয় প্যারাসিটামল ও ম্যালেরিয়ার ওষুধ ক্লোরোকুইন। এক সময়ে তৈরি হওয়া সাপে কাটার ওষুধ উৎপাদন শুরু করারও পরিকল্পনা রয়েছে সংস্থার।