হাতবদলের কথা ঘোষণা হয়েছে দিন পাঁচেক আগেই। এ বার সেই লেনদেনের জন্য কার কতটা আর্থিক লাভ হবে এবং সে জন্য করের দায় কী চাপবে, তার হিসেব কষতে বসল আয়কর দফতর।
ফ্লিপকার্টের ৭৭% অংশীদারি হাতে নিতে বুধবারই ১,৬০০ কোটি ডলারের চুক্তির কথা ঘোষণা করেছে বিশ্বের অন্যতম রিটেল বহুজাতিক, আমেরিকার ওয়ালমার্ট। কেন্দ্রীয় আয়কর দফতর সূত্রের খবর, এ বার ভারতীয় ই-কমার্স সংস্থাটির কাছে শেয়ার কেনার সেই চুক্তিই দেখতে চাওয়া হবে। যাতে করের হিসেব সেরে ফেলা যায়। শুধু তাই নয়, এই লেনদেনের ক্ষেত্রে কর ফাঁকি প্রতিরোধ আইনের (জিএএআর) আশ্রয় নিতে হবে কি না, তা-ও খুঁজে দেখবে তারা।
দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে আয়কর আইনের ৯(১) ধারা দেখছে তারা। এর মধ্যে পড়ে দু’টি সংস্থার মধ্যে পরোক্ষ ভাবে অংশীদারি লেনদেনের চুক্তি সংক্রান্ত বিষয়। উদ্দেশ্য, সিঙ্গাপুর, মরিশাসের মতো দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক কর চুক্তির আওতায় যে সব সুবিধা মেলে, সেগুলি ওয়ালমার্টের কাছে অংশীদারি বিক্রি করা ফ্লিপকার্টের বিদেশি লগ্নিকারীরা পাবেন কি না খতিয়ে দেখা।
কারণ সিঙ্গাপুরে নথিভুক্ত ফ্লিপকার্ট প্রাইভেট লিমিটেডের হাতেই রয়েছে ফ্লিপকার্ট ইন্ডিয়ার সিংহভাগ শেয়ার। ফলে চুক্তি অনুযায়ী, ওয়ালমার্টকে ৭৭% অংশীদারি বেচবে সিঙ্গাপুরের সংস্থাটিই। আর তাতেই উঠছে বিদেশি লগ্নিকারীর শেয়ার হাতবদলের ক্ষেত্রে কর নির্ধারণের প্রশ্ন। যদিও চুক্তি মাফিক, শেষ পর্যন্ত ফ্লিপকার্ট ইন্ডিয়ার মালিকানাই পাবে মার্কিন রিটেল দৈত্যটি।
আয়কর দফতরের আধিকারিকের দাবি, করের ব্যাপারে নিশ্চিত হতে তাই বিক্রির যাবতীয় প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলেই রাজস্ব দফতর চুক্তিটি দেখতে চেয়ে চিঠি লিখবে ফ্লিপকার্টকে।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এর আগে ভারতে ভোডাফোন-হাচিসন বা কেয়ার্নের ব্যবসায়িক লেনদেনের ক্ষেত্রে কর নিয়ে যে জটিলতা তৈরি হয়েছে, ফ্লিপকার্ট-ওয়ালমার্টের ক্ষেত্রে তা হোক চায় না আয়কর দফতর। যে কারণে কোমর বেঁধেছে তারা।
প্রসঙ্গত, ফ্লিপকার্টে ওয়ালমার্টের অংশীদারি কেনার চুক্তি সফল হতে গেলে সায় পেতে হবে প্রতিযোগিতা কমিশনের। তবে মার্কিন শেয়ার বাজারে দাখিল করা বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ালমার্ট বলেছে, ভারতে যাবতীয় নিয়ন্ত্রকের ছাড়পত্র যদি এক বছরের মধ্যে না মেলে, তবে চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার অধিকার আছে তাদের। আর তা জরিমানা ছাড়াই।