গত এক দশকে কেমন আয় করেছেন বিশ্বের ধনকুবেররা? সবাই কি আরও সমৃদ্ধশালী হলেন? নাকি, কেউ কেউ পিছিয়েও পড়েছেন আগের অবস্থান থেকে? জানতে হলে দেখতে হবে ফোর্বসের তালিকা। ২০১০ সালে এই মার্কিন পত্রিকা যে ধনকুবের-তালিকা প্রকাশ করেছিল, তার পাশাপাশি রাখতে হবে ২০১৯ সালের তালিকা। চোখে পড়বে শিল্পপতিদের উত্থান-পতন।
২০১০ সালে বিশ্বের ৪৩-তম ধনী শিল্পপতি ছিলেন জেফ বেজোস। তখন তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১২৩০ কোটি ডলার। সেই অবস্থান আমূল বদলে গিয়েছে গত এক দশকে। ফোর্বস পত্রিকার তালিকায় অ্যামাজন-কর্ণধার বেজোস এখন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। বর্তমানে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল ১১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার।
ধূমকেতুর মতো উত্থানের সাক্ষী বার্নার্ড অ্যারনল্ট। ফরাসি বিলাসপণ্য নির্মাতা এখন বিশ্বের দ্বিতীয় ধনীতম। সম্পত্তির পরিমাণ ১১ হাজার ২০০ কোটি ডলার। দশ বছর আগে এই পরিমাণ ছিল ২৭৫০ কোটিন ডলার। বলা হচ্ছে, অ্যারনল্টের সংস্থা এলভিএমএইচ যে হারে এগোচ্ছে, তাতে বেজোসের ঘাড়ে নিশ্বাস ফেলছেন তিনি।
মাইক্রোসফ্টের সহ প্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস দশ বছর আগে ছিলেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। মোট সম্পত্তির পরিমাণ ছিল পাঁচ হাজার তিনশো কোটি ডলার। দশ বছর পরে তাঁর সম্পত্তি বেড়েছে অনেকটাই। ১০ হাজার ৮০০ বিলিয়ন ডলারের মালিক গেটস এখন বিশ্বের তৃতীয় ধনী ব্যক্তি।
এখন ওয়ারেন বাফের সম্পত্তির পরিমাণ আট হাজার ৯০০ কোটি ডলার। ১০ বছর আগে তিনি ছিলেন ৩৫৫০ কোটি ডলারের মালিক। এখন তিনি বিশ্বের চতুর্থ ধনীতম ব্যক্তি।
মার্ক জাকারবার্গ ২০১০ সালে ছিলেন বিশ্বের কনিষ্ঠতম বিলিয়নেয়ার। বিশ্ব ধনকুবের-তালিকায় তিনি যুগ্ম ভাবে ছিলেন ২১ নম্বর স্থানে। তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছিল চারশো কোটি ডলার। বিগত দশকে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ বেড়েছে কয়েক গুণ। সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবসায়িক-গ্রাফ নীচে নামলেও ফেসবুক প্রতিষ্ঠাতা এখনও বিশ্বের পঞ্চম ধনী ব্যক্তি। সম্পত্তির পরিমাণ আট হাজার কোটি ডলার। তবে তিনি আর কনিষ্ঠতম বিলিয়য়ার নন।
এক দশকে বিশ্বের ধনী ব্যক্তিদের তালিকায় তিন ধাপ এগিয়েছেন অ্যামান্সিও ওর্তেগা। ২০১০ সালে তাঁর মোট সম্পত্তি ছিল আড়াই হাজার কোটি ডলার। সাত হাজার ছশো কোটি ডলারের সম্পত্তি নিয়ে তিনি বিশ্বের ষষ্ঠ ধনকুবের।
ওরাকল-এর সহ প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন ২০১০ সালে ছিলেন বিশ্বের ষষ্ঠ ধনী ব্যক্তি। সম্পত্তির পরিমাণ ছিল দু’হাজার আটশো কোটি ডলার। এখন ছয় হাজার সাতশো কোটি ডলারের সম্পত্তি নিয়েও তিনি একধাপ পিছিয়েছেন তালিকায়। রয়েছেন সপ্তম স্থানে।
বিশ্বের অষ্টম ধনকুবের এখন ল্যারি পেজ। সম্পত্তির পরিমাণ ৬ হাজার ৪৩০ কোটি ডলার। দশ বছর আগে এই পরিমাণ ছিল এক হাজার ৭৫০ কোটি ডলার।
লাতিন আমেরিকার ধনীতম ব্যক্তি কার্লোস স্লিম হেলু আছেন এই তালিকার নবম স্থানে। ২০১০ থেকে ২০১৩ অবধি ফোর্বস এর তালিকায় তিনি ছিলেন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি। বর্তমানে তাঁর সম্পত্তির পরিমাণ ছয় হাজার ৪১০ কোটি ডলার।
ল্যারি পেজের সঙ্গে ১৯৯৮ সালে গুগল প্রতিষ্ঠা করেছিলেন সের্গেই ব্রিন। ছয় হাজার দুশো কোটি ডলারের মালিক ব্রিন এখন বিশ্বের দশম ধনকুবের।
মুকেশ অম্বানী ফের এশিয়ার ধনীতম ব্যক্তি। ছয় হাজার কোটি ডলার সম্পত্তি নিয়ে তিনি এখন বিশ্বের একাদশতম ধনী ব্যক্তি। গত বছর তিনি প্রথম দশেও স্থান পেয়েছিলেন।
২০১০ সালে বিশ্ব-ধনকুবেরদের তালিকায় কোথাও ছিলেন না ফ্রাঁসোয়া বেত্তঁকুর মেয়ার্স। কিন্তু এখন তিনি বিশ্বের ধনীতম মহিলা এবং চতুর্দশতম ধনকুবের শিল্পপতি। ২০১৭ সালে তাঁর মায়ের মৃ্ত্যুর ফলে ছবিটা পাল্টে যায়। ব্যবসার ৩৩ শতাংশ স্টেক পেয়ে ফ্রাঁসোয়া এখন লোরিয়াল-কর্ণধার। তাঁর ব্র্যান্ডেড প্রসাধনী সামগ্রীর বিপুল বাজারের জোরে ফ্রাঁসোয়া গত আর্থিক বর্ষে চার হাজার ৯৩০ কোটি ডলারের মালকিন। দশ বছর আগে যে পরিমাণ ছিল চার হাজার ২২০ কোটি ডলার। (ছবি: ফেসবুক)