—ফাইল চিত্র।
রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গর্ভনর পদ থেকে সদ্য অবসর নিয়েছেন শক্তিকান্ত দাস। ছ’বছর কাটানোর পরে ১১ ডিসেম্বর এই পদ থেকে অবসর নিলেন তিনি। নতুন গর্ভনর হিসাবে রাজস্ব সচিব সঞ্জয় মলহোত্রকে নিয়োগ করেছে কেন্দ্র। আরবিআইয়ের প্রাক্তন সর্বময় কর্তা কত বেতন পেতেন তা জানতে সংবাদমাধ্যম ‘মানি কন্ট্রোল’ তথ্যের অধিকার আইনে (আরটিআই) আবেদন করেছিল। সেই আবেদনের উত্তরে কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত অর্থবর্ষে (২০২৩-’২৪) শক্তিকান্তের পারিশ্রমিক ছিল প্রতি মাসে আড়াই লক্ষ টাকা। তাঁর আগে ওই পদে দায়িত্ব সামলানো উর্জিত পটেলের সমপরিমাণ বেতনই পেতেন শক্তিকান্ত। এ ছাড়াও মুম্বইয়ে মালাবার হিলসে গভর্নরের জন্য একটি বাংলো নির্দিষ্ট করা আছে যার মূল্য ৪৫০ কোটি টাকা। এমনটাই জানিয়েছিলেন ভারতের শূর্ষ ব্যাঙ্কের প্রাক্তন গর্ভনর রঘুরাম রাজন।
শক্তিকান্তের সহযোগী আধিকারিকদের বেতন সম্পর্কেও আরটিআইয়ে জানতে চাওয়া হয়। গত অর্থবর্ষে চার ডেপুটি গভর্নর এমডি পাত্র, এম রাজেশ্বর রাও, এমকে জৈন এবং টি রবিশঙ্কর ২ লাখ ২৫ হাজার টাকা মাসিক বেতন পেতেন বলে জানা গিয়েছে। এ ছাড়াও অনিলকুমার শর্মা, শিরীষচন্দ্র মুর্মু, ওমপ্রকাশ মল এবং মৃদুলকুমার সাগরের মতো এগজ়িকিউটিভ ডিরেক্টররা প্রত্যেকে প্রতি মাসে ২ লক্ষ ১৬ হাজার টাকা বেতন পেতেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কের কর্তাদের সমপরিমাণ বেতন পান এসবিআই ও ব্যাঙ্ক অফ বরোদার শীর্ষকর্তারাও। স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (এসবিআই)-র চেয়ারম্যান দীনেশ খারা গত অর্থবর্ষে পারিশ্রমিক পেয়েছিলেন বার্ষিক ২৭ লক্ষ টাকা। এ ছাড়া মহার্ঘ ভাতা বাবদ পেয়েছিলেন ৭ লক্ষ ৪২ হাজার ৫০০ টাকা।
অন্য দিকে, ২০২২-২৩ সালের অর্থবর্ষে ব্যাঙ্ক অফ বরোদার ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং চিফ এগজ়িকিউটিভ অফিসার সঞ্জীব চড্ডার বেতন ছিল দীনেশের বেতনের থেকে বেশি। তিনি পেয়েছিলেন ৩৮.১৯ লক্ষ টাকা। এ ছাড়াও অনুসঙ্গ ভাতা হিসাবে তাঁকে দেওয়া হয়েছিল ২ লক্ষ ২৭ হাজার টাকা।
গত অর্থবর্ষে দেশের প্রধান পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শীর্ষ আধিকারিকদের বেতন বার্ষিক ৩৪ লক্ষ থেকে ৪০ লক্ষ টাকার মধ্যেই রয়েছে বলে আরটিআইয়ের তথ্যে জানানো হয়েছে। এ-ও জানানো হয়েছে, ২০১৬ সাল থেকে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির শীর্ষ আধিকারিকদের বেতন বৃদ্ধি করেনি আরবিআই।
তুল্যমূল্য বিচারে দেশের বেসরকারি ব্যাঙ্কের শীর্ষ আধিকারিকদের বেতনের সঙ্গে সরকারি ব্যাঙ্কের বেতনের ফারাক চোখে পড়ার মতই। আরটিআইয়ের তথ্য বলছে, এইচডিএফসি ব্যাঙ্কের সিইও কেকি মিস্ত্রি ২০২২ অর্থবর্ষে বার্ষিক ১৯ কোটি টাকা বেতন পেয়েছিলেন। প্রধান পাঁচটি বেসরকারি ব্যাঙ্কের শীর্ষ আধিকারিকদের বার্ষিক বেতন ঘোরাফেরা করে ২.৩ কোটি থেকে ৭.১ কোটির আশপাশে। বেসরকারি ব্যাঙ্কগুলির তুলনায় দেশের প্রধান ব্যাঙ্কের শীর্ষকর্তাদের বার্ষিক বেতনের এত ফারাক কেন? এ বিষয়ে আরবিআই কোনও তথ্য সরবরাহ করেনি। দেশের শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, এই প্রশ্ন তথ্যের অধিকারের আওতায় পড়ে না। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির প্রধানদের বার্ষিক লক্ষ্য কী এবং তাঁদের কর্মক্ষমতা কিসের ভিত্তিতে বিচার করা হয় সে সম্পর্কেও আরবিআইয়ের কাছে তথ্য নেই বলে আরটিআইয়ে উল্লেখ করা হয়েছে।