দাম বাড়ার শঙ্কায় কাঁটা আবাসন শিল্প

নোট সঙ্কটের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দাম বাড়তে চলেছে ফ্ল্যাটের। ক্রেতাদের এই বাড়তি চাপের মুখে ঠেলার জন্য সিমেন্ট সংস্থাগুলিকে দায়ী করছে আবাসন শিল্পমহল।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০৩:৩৭
Share:

নোট সঙ্কটের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠার আগেই দাম বাড়তে চলেছে ফ্ল্যাটের। ক্রেতাদের এই বাড়তি চাপের মুখে ঠেলার জন্য সিমেন্ট সংস্থাগুলিকে দায়ী করছে আবাসন শিল্পমহল।

Advertisement

গত দু’মাস ধরেই বাড়ছে সিমেন্টের দাম। নির্মাণ সংস্থাগুলির সংগঠন ক্রেডাইয়ের অভিযোগ, ৩১০ টাকা দামের এক বস্তা সিমেন্টের দাম এখন দাঁড়িয়েছে ৩৭০ টাকা। এই চড়া দামের জন্য প্রকল্পের খরচ বাড়ছে বেশ কয়েক গুণ। সেই খরচের বোঝা ক্রেতাদের কাঁধেই চাপবে বলে
আশঙ্কা ক্রেডাইয়ের। হিসেব মতো, সিমেন্টের বস্তা প্রতি ১০০ টাকা দাম বাড়লে প্রতি বর্গ ফুটে ৫০ টাকা খরচ বেড়ে যায়।

শুধুই চড়া দর নয়, কম দামের সাধারণ মানের সিমেন্ট বাজার থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ। সাধারণত, গ্যারাজ বা ফ্ল্যাটের বাইরে অন্য জায়গা নির্মাণের জন্য উঁচুমানের সিমেন্ট প্রয়োজন হয় না। ক্রেডাইয়ের এক সদস্যের অভিযোগ, সিমেন্ট সংস্থাগুলি একজোট হয়ে এই কম দামের সিমেন্ট বাজার থেকে সরিয়ে দিয়েছে। ফলে সাধারণ সিমেন্টের বদলে নামী ব্র্যান্ডের সিমেন্ট কিনতে বাধ্য হচ্ছেন তাঁরা।

Advertisement

চাপান উতোর


অভিযোগ সিমেন্ট শিল্পের দিকে


সিমেন্টের চড়া দামের বোঝা ক্রেতার কাঁধেই চাপার আশঙ্কা


বস্তা পিছু ১০০ টাকা দাম বাড়লে প্রতি বর্গ ফুটে খরচ বাড়ে ৫০ টাকা


বাজারে অমিল সাধারণ মানের সিমেন্ট


মার খাচ্ছে কম দামি প্রকল্প


উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণেই দাম চড়ছে, পাল্টা দাবি সিমেন্ট শিল্পের

আর এই বর্ধিত খরচের ফলে সব চেয়ে বেশি মার খাবে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তদের আবাসন প্রকল্প। ক্রেডাই বেঙ্গলের কর্তা নন্দু বেলানি জানান, পশ্চিমবঙ্গে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তের জন্য সব মিলিয়ে ২০ লক্ষ আবাসন তৈরি হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘কম দামি প্রকল্প সময়ে শেষ করতে হলে কাঁচামালের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি। কারণ, এই ধরনের প্রকল্পে লভ্যাংশের পরিমাণ কম থাকে।” প্রসঙ্গত, নোটের আকালেও এ ধরনের প্রকল্পের হাত ধরেই অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছিল আবাসন শিল্প। তাই এই ব্যবসায় কোপ পড়ার সম্ভাবনায় শঙ্কিত নির্মাণ সংস্থাগুলি। সব মিলিয়ে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দেশে সকলের মাথায় ছাদ জোটানোর যে-প্রকল্প কেন্দ্র হাতে নিয়েছে, তাতে বাদ সাধছে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়তে থাকা সিমেন্টের দাম।

সিমেন্টের দাম ২০ থেকে ৪০ শতাংশ বাড়ার কারণ কী? সিমেন্ট শিল্পের দাবি, উৎপাদন খরচ বাড়ার কারণেই দাম বাড়িয়েছে তারাও। এই দাবি উড়িয়ে দিয়ে নির্মাণ শিল্পের অভিযোগ, পণ্য-পরিষেবা কর বা জিএসটি চালু হওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখে আগেভাগেই লাভের পরিমাণ বাড়িয়ে রাখছে বিভিন্ন সিমেন্ট সংস্থা। তাদের দাবি, ডিসেম্বরে শেষ হওয়া ত্রৈমাসিকের হিসেব অনুযায়ী সিমেন্ট উৎপাদকরা গড়ে ৩০ শতাংশ লাভ করেছে। কেন্দ্র সিমেন্ট শিল্পকে যথেষ্ট ভর্তুকি দেওয়ার পরে এই পণ্যের উৎপাদন খরচ আদতে কমার কথা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement