মানেসরের কারখানায় ধর্মঘটে হন্ডা ইন্ডিয়ার ঠিকা কর্মীরা। ছবি: সংগৃহীত।
ইউনিয়ন ও মালিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠকেও মিলল না রফাসূত্র। অবশেষে ঠিকা কর্মীদের টানা ধর্মঘটের জেরে অনির্দিষ্টকালের জন্য মানেসরের কারখানায় কাজ বন্ধ রাখার কথা জানালেন হন্ডা ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ।
রবিবারই নোটিস ঝুলিয়ে হন্ডা ইন্ডিয়া কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, সোমবার থেকে কারখানা বন্ধ রাখা হবে। সপ্তাহখানেক ধরেই গুরুগ্রামের ওই কারখানায় ধর্মঘট করছেন ২০০০ ঠিকা কর্মী। যদিও হন্ডা মোটরসাইকেল অ্যান্ড স্কুটার ইন্ডিয়া (এইচএমসআই)-এর তরফে অভিযোগ, স্থায়ী ও অস্থায়ী কর্মী এবং শ্রমিক ইউনিয়নের সদস্যদের অসদাচারণের জন্যই কারখানা বন্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা।
গুরুগ্রামের ওই কারখানায় শ্রমিক অসন্তোষ তীব্র হয় ৫ নভেম্বর। ওই দিন কারখানার ঠিকা কর্মীদের একটি তালিকা প্রকাশ করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। তাতে এমন অনেকের নাম ছিল যাঁদের অবসরের সময় হয়ে গিয়েছে বার শীঘ্রই অবসর নেবেন। ওই তালিকার সকলকেই অনির্দিষ্টিকালের জন্য ছুটিতে যাওয়ার নির্দেশ দেন কারখানা কর্তৃপক্ষ। এর পরই ধর্মঘট ডাকেন ইউনিয়নের নেতারা।
আরও পড়ুন: অর্থনীতির ‘অসুখ‘ কমার কোনও লক্ষণ নেই, শিল্পোৎপাদন আট বছরের তলানিতে
নভেম্বর থেকে মানেসরের প্লান্টে টু-হুইলার উৎপাদন কমে দাঁড়িয়েছে দিন প্রতি সাড়ে ৩ হাজার ইউনিটে। ছবি: সংগৃহীত।
মালিকপক্ষের প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন ওই কারখানার শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রমেশ প্রধান। তিনি জানিয়েছেন, একটা সময় এই কারখানায় প্রতি দিন ৬ হাজার ইউনিট টু-হুইলার উৎপাদন হত। তবে নভেম্বর থেকে তা কমে দাঁড়িয়েছে দিন প্রতি সাড়ে ৩ হাজার ইউনিটে। তিনি বলেন, ‘‘উৎপাদন কমানোর পাশাপাশি ঠিকা কর্মীদেরও ছাঁটাই করে চলেছে মালিকপক্ষ। ২০১৯-র গোড়া থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় হাজার কর্মী ছাঁটাই করা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: রাষ্ট্রপতি শাসনের পথেই মহারাষ্ট্র, সুপারিশ রাজ্যপালের, অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা
মানেসরের প্লান্টটির প্রধান শৈবাল মৈত্র একটি নোটিশ জারি করে লিখেছেন, ‘এই বেআইনি ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার জন্য ঠিকা কর্মীদের বার বারই উস্কানি দিয়েছে ইউনিয়ন। ম্যানেজমেন্ট এবং ঠিকাদাররা মৌখিক ভাবে বললেও, এমনকি লিখিত নোটিশ দেওয়া সত্ত্বেও ইউনিয়ন, ঠিকা কর্মী ও সংস্থার কর্মীদের এই বেআইনি কাজকর্ম বন্ধ হয়নি। ফলে সমস্ত শেয়ারহোল্ডারদের জানাচ্ছি যে সোমবার থেকে প্লান্টের কাজ বন্ধ রাখা হবে।’
মালিকপক্ষ যা-ই বলুক না কেন, এই ধর্মঘটে ঠিকা কর্মীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন কংগ্রেস বিধায়ক চিরঞ্জীব যাদব-সহ বহু রাজনৈতিক নেতা। অল ইন্ডিয়া লেবার ইউনিয়ন কাউন্সিলের প্রতিনিধিরাও রবিবার ধর্মঘটীদের সঙ্গে দেখা করেন। এইচএমসআই-এর কর্মী ইউনিয়নের সভাপতি সুরেশ গৌর জানিয়েছেন, মালিকপক্ষের সঙ্গে দফায় দফায় বৈঠক করলেও অচলাবস্থা কাটেনি।