প্রতীকী ছবি।
করোনাকালে বিভিন্ন সংস্কারমূলক পদক্ষেপে কেন্দ্রের সাফল্যের দাবি করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ঠিক একই দিনে একই বিষয় তুলে ধরে অর্থনীতির অগ্রগতির দাবি করল অর্থ মন্ত্রক। সোমবার সেপ্টেম্বরের আর্থিক রিপোর্ট প্রকাশ করে তারা জানাল, কৌশলগত সংস্কারের পাশাপাশি করোনার প্রতিষেধক প্রয়োগে গতি বৃদ্ধির কাঁধে ভর করেই ঘুরে দাঁড়াচ্ছে দেশের অর্থনীতি। তাদের দাবি, সরবরাহ ব্যবস্থা মসৃণ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা বৃদ্ধির লক্ষণও স্পষ্ট হচ্ছে বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিসংখ্যানে। মাথা নামাচ্ছে খুচরো বাজারের মূল্যবৃদ্ধির হার। তবে রিপোর্টে এ-ও জানানো হয়েছে, আশঙ্কা কমছে না বিশ্ব বাজারে অশোধিত তেলের দামে অস্থিরতা এবং ভোজ্য তেল ও বিভিন্ন ধাতুর দাম মাথাচাড়া দেওয়া নিয়ে।
অতিমারির দেশের অর্থনীতিকে যে খাদে ফেলে দিয়েছিল, সেখান থেকে উঠে আসার দাবি অনেক দিন ধরেই করে আসছেন মোদী সরকারের মন্ত্রী ও অফিসারেরা। যদিও সম্প্রতি বিশ্ব ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন মূল্যায়ন সংস্থা চলতি অর্থবর্ষের জন্য ভারতের আর্থিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস কিছুটা ছাঁটাই করেছে। জানিয়েছে, কয়েক মাস আগেও যে গতিতে অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করা হচ্ছিল, বাস্তবে তা হয়নি। সঙ্গে বেড়ে চলেছে জ্বালানির দামের চোখরাঙানি। দেশের অধিকাংশ জায়গাতেই লিটার প্রতি পেট্রলের দর ১০০ টাকা পার করেছে। কয়েকটি জায়গায় ‘সেঞ্চুরি’ করেছে ডিজ়েলও। সোমবার তা হয়েছে কর্নাটক এবং কেরলের কয়েকটি জায়গায়। মেট্রো শহরগুলির মধ্যে মুম্বইয়ে ১০০ টাকা পার করেছে ডিজ়েল। এ দিন পর্যন্ত টানা সাত দিন বেড়েছে দুই জ্বালানির দর। আজ, মঙ্গলবার অবশ্য কলকাতায় সেগুলির দর অপরিবর্তিত থাকছে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, বিশেষ করে ডিজ়েলের দাম এই জায়গায় থাকলে পরিবহণের খরচ বেড়েই চলবে। তাতে পণ্যের দাম চড়া থাকবে খুচরো বাজারেও। শেষ ঋণনীতি ঘোষণার সময়ে জ্বালানির দর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসও। কিন্তু এ দিন অর্থ মন্ত্রক যে রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, তার ছত্রে ছত্রে অর্থনীতিতে রুপোলি রেখার দাবি।
রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে, সংস্কার এবং প্রতিষেধক প্রয়োগের কাঁধে ভর করে অর্থনীতি ঠিক পথে চলছে। বিভিন্ন মাপকাঠিতেই তা স্পষ্ট। কৃষি, উৎপাদন, পরিষেবা ক্ষেত্র ঘুরে দাঁড়ানোর পাশাপাশি, উল্লেখযোগ্য ভাবে মাথা তুলেছে কর সংগ্রহও। টানা ছ’মাস রফতানির অঙ্ক ৩০০০ কোটি ডলারের উপরে। আমদানি বৃদ্ধির ফলে বাণিজ্য ঘাটতি ফের বাড়ছে বটে, তবে তা আদতে দেশে চাহিদা বৃদ্ধি ও শিল্প সংস্থাগুলির কাঁচমাল কেনা বাড়ানোর প্রতিফলন। বেড়েছে ব্যাঙ্কের ঋণ বৃদ্ধির হার।