—প্রতীকী ছবি।
স্বাস্থ্য বিমাকে একটা সময়ে আর্থিক বিনিয়োগ হিসেবে দেখা হত। কিন্তু চিকিৎসা খরচ বেড়ে যাওয়ায় দিন দিন এর গুরুত্ব বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন আর একে বিলাসিতা বলে মনে করা হয় না। বরং অসুস্থতার সময়ে ভাল স্বাস্থ্য পরিষেবা পেতে একে ‘অত্যাবশ্যক’ বলে স্বীকার করে নিয়েছে মধ্যবিত্ত আমজনতা।
স্বাস্থ্য বিমার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করার সঙ্গে সঙ্গেই এতে লগ্নির পরিমাণ বেড়েছে। তবে অনেকেরই এই বিমা সম্পর্কে সম্যক ধারণা নেই। যা এতে বিনিয়োগের আগে থাকা উচিত বলে মনে করেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। তাঁদের কথায়, গ্রাহকদের নানা প্রশ্নের সমাধানের রাস্তা স্বাস্থ্য বিমার সংস্থাগুলিকে দেখাতে হবে। যা গ্রাহকদের আরও উৎসাহিত করবে।
বিনিয়োগকারীদের অনেকেরই ধারণা স্বাস্থ্য বিমায় লগ্নির ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। সেটা কিন্তু সব সময়ের জন্য সঠিক নয়। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, মাসিক বা ত্রৈমাসিক কিস্তিতে (প্রিমিয়াম) স্বাস্থ্য বিমায় বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। এটিকে আরও জনপ্রিয় করার দিকে জোর দিয়েছেন তাঁরা। যা মেট্রো শহরের পাশাপাশি মফস্সলেও স্বাস্থ্য বিমার গ্রাহক পেতে সাহায্য করবে।
পাশাপাশি, কিস্তিতে স্বাস্থ্য বিমায় বিনিয়োগের সুযোগ তরুণ প্রজন্মকে আকর্ষণ করছে। সাধারণত, এক বারে বড় অঙ্কের অর্থ খরচের চেয়ে ছোট ছোট পেমেন্ট পছন্দ করেন তাঁরা। পরিসংখ্যান বলছে, গত বছরের (পড়ুন ২০২৩) তুলনায় মাসিক কিস্তির স্বাস্থ্য বিমায় বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এই সংখ্যা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে।
সাধারণ ভাবে স্বাস্থ্য বিমার গ্রাহকদের বছরে এক বার কিস্তির টাকা দিতে হয়। যা উচ্চ আয়ের পরিবারগুলি গ্রহণ করলেও মধ্য ও নিম্ন আয়ের বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করেনি। মাসিক কিস্তির স্বাস্থ্য বিমা আনার পর সেই ধারণা পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। এ ছাড়া বিমার টাকা জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধা দিচ্ছে সরকার। বর্তমানে মোবাইল ওয়ালেট বা ইউপিআইয়ের মাধ্যমে এর টাকা মেটাতে পারেন গ্রাহক।
স্বাস্থ্য বিমার উপর থেকে পণ্য ও পরিষেবা কর (গুডস অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্যাক্স বা জিএসটি) কমানোর বিষয়ে চিন্তাভাবনা করছে কেন্দ্র। চলতি বছরের অক্টোবরে এই নিয়ে বৈঠকে বসেছিল জিএসটি পরিষদের তৈরি মন্ত্রিগোষ্ঠী। সূত্রের খবর, সেখানে প্রবীণ নাগরিক ছাড়া অন্যান্য গ্রাহকের ক্ষেত্রে ৫ লক্ষ টাকা কভারেজের স্বাস্থ্য বিমায় জিএসটি মকুবের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে ৫ লক্ষ টাকার বেশি কভারেজের স্বাস্থ্য বিমায় ১৮ শতাংশ জিএসটি কার্যকর হবে।
অক্টোবরেই এই নিয়ে জিএসটি পরিষদ কাছে রিপোর্ট জমা করবে ওই মন্ত্রিগোষ্ঠী। যার উপর ভিত্তি করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে পরিষদ। স্বাস্থ্য বিমায় জিএসটি কমলে এর গ্রাহক সংখ্যা যে কয়েক গুণ বাড়বে তা বলাই বাহুল্য।