GST

জিএসটি-র হারে বদল, কমল ৩৩টি নিত্যপণ্য জিনিসের দাম

ভোটের আগে জিএসটি-র কাঠামো বদল করল মোদী সরকার।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২২ ডিসেম্বর ২০১৮ ১৬:৩৮
Share:

অরুণ জেটলি।—ফাইল চিত্র।

সামনে লোকসভা নির্বাচন। তার আগে পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি)-এর কাঠামো ফের বদলে ফেলল মোদী সরকার। ৩৩টি নিত্যপণ্য জিনিসের জিএসটি হার ১৮ থেকে কমিয়ে ১২ এবং ৫ শতাংশ করা হল। ফলে ওই জিনিসগুলির দাম কমে গেল অনেকটাই। আগামী ১ জানুয়ারি থেকে এই নয়া জিএসটি হার কার্যকর হবে।

Advertisement

চেয়ারম্যান অরুণ জেটলির নেতৃত্বে শনিবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক বসেছিল। সেখানেই এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। বৈঠক থেকে বেরনোর সময় এ কথা জানান পুদুচেরির মুখ্যমন্ত্রী ভি নারায়ণস্বামী। তিনি জানান, ‘‘সাধারণ মানুষের কথা মাথায় রেখেই এই সিদ্ধান্ত। শুধুমাত্র বিলাস দ্রব্যের ক্ষেত্রেই জিএসটির হার ২৮ শতাংশ রাখা হবে। আগামী বছর জানুয়ারিতে জিএসটি কাউন্সিলের পরবর্তী বৈঠক। সেখানে রিয়েল এস্টেট নিয়ে আলোচনা হবে।’’ লটারির টিকিটের উপর কর বসানো নিয়েও আলোচনা হবে পরবর্তী বৈঠকে।

ওই বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠক করেন অরুণ জেটলিও। তিনি বলেন, ‘‘আজ জিএসটি কাউন্সিলের ৩১তম বৈঠক ছিল। তাতে করের বিভিন্ন স্তরগুলি সরলীকরণের প্রস্তাব ওঠে। যাতে সাধারণ মানুষ বিপাকে না পড়েন, আবার রাজস্ব আদায়েও ভারসাম্য বজায় থাকে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: জিএসটিতে হ্যাপি নিউ ইয়ার, দেখে নিন কিসের কিসের দাম কমছে​

জিএসটি পরিকাঠামোর বদলে যে পণ্যগুলির দাম কমতে চলেছে—

কপিকল, ৩২ ইঞ্চি পর্যন্ত কম্পিউটার মনিটর এবং টেলিভিশন। দাম কমছে পুরনো রবারের টায়ার, লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি দিয়ে তৈরি মোবাইল পাওয়ার ব্যাঙ্ক এবং খেলার সরঞ্জামের। ৩২ ইঞ্চির টেলিভিশন এবং কম্পিউটার মনিটরের জিএসটি হার ২৮ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। লিথিয়াম আয়ন ব্যাটারি আগে থেকেই ১৮ শতাংশের স্তরে ছিল। তাতে কোনও পরিবর্তন করা হয়নি। দাম কমছে সিনেমার টিকিটেরও। ১০০ টাকার মধ্যে টিকিটের দাম হলে এতদিন তাতে ১৮ শতাংশ জিএসটি বসত। এ দিন তা কমিয়ে ১২ শতাংশ করা হয়েছে। ১০০ টাকার বেশি দামের ক্ষেত্রে আগে ২৮ শতাংশ জিএসটি বসত। তা কমিয়ে আনা হয়েছে ১৮ শতাংশে। ভিডিয়ো গেমসের সরঞ্জাম এবং ডিজিটাল ক্যামেরাকেও ২৮ থেকে ১৮ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। ভিন্নভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের কথা ভেবে হুইল চেয়ারের উপর জিএসটি কমিয়ে ২৮ থেকে ৫ শতাংশ করা হয়েছে। থার্ড পার্টি বিমার ক্ষেত্রে করের পরিমাণ কমে ১২ শতাংশ হচ্ছে। সস্তা হতে চলেছে তীর্থযাত্রাও। বিমানে ইকনমিক ক্লাসে গেলে এ বার থেকে ৫ শতাংশ জিএসটি দিতে হবে। বিজনেস ক্লাসের ক্ষেত্রে তা ১২ শতাংশ, আগে যা ছিল ২৮ শতাংশ। সৌরশক্তি উত্পাদন কেন্দ্রগুলির উপর ৫ শতাংশ জিএসটি বসবে। তীর্থযাত্রার ক্ষেত্রে এতদিন বিমানের টিকিটের উপর যে কর বসত, এ বার তাও আর দিতে হবে না। জন ধন যোজনার আওতায় যাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে, তাঁদের কর পরিষেবার বাইরে রাখা হয়েছে। শাক-সবজি, সে ফ্রোজেন হোক বা ব্র্যান্ডেড অথবা প্যাকেটে মোড়া, এতদিন তাতে ৫ শতাংশ জিএসটি বসত। এ বার থেকে কোনও করই বসবে না তাতে। তবে এয়ার কন্ডিশনার, ডিশ ওয়াশার, গাড়ির যন্ত্রাংশ, সিমেন্ট, পান মশলা, কোল্ড ড্রিঙ্ক এবং তামাকজাত দ্রব্যের উপর ২৮ শতাংশ করই বসবে।

আরও পড়ুন: পেট্রল ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হল দলিত জনমজুরের মেয়েকে, দুষ্কৃতীরা এখনও অধরা​

২০১৭ সালের ১ জুলাই থেকে পণ্য পরিষেবা কর চালু করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। তাতে একধাক্কায় করের বোঝা অনেকটাই বেড়ে যায়। সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েন ক্ষুদ্র এবং মাঝারি ব্যবসায়ীরা। সদ্য সমাপ্ত পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে যার প্রভাব পড়ে সরাসরি। তাঁদের ক্ষোভের আঁচ টের পায় সরকারও। তাই লোকসভা নির্বাচনের আগে সময় থাকতে তারা ঘর গুছিয়ে নিতে উদ্যোগী হয়েছে বলে ধারণা রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের। নতুন বছরের শুরুতে জিএসটি-র নয়া হার চালু হলে দেশের রাজস্বে সবমিলিয়ে প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকার প্রভাব পড়বে বলে জানিয়েছেন অরুণ জেটলি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement