প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, তেলঙ্গানার মতো বিজেপি বিরোধী রাজ্যগুলি জিএসটি ক্ষতিপূরণ নিয়ে মোদী সরকারকে একহাত নেওয়ার জন্য মুখিয়ে রয়েছে। ওই ক্ষতিপূরণ ভরার বদলে ধার করে মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ মেনে নিতে পারেনি তারা। সোমবার জিএসটি পরিষদের বৈঠকে সেই বিষয়টি নিয়েই ঝড় ওঠার আশঙ্কা। বৈঠকের প্রাক্কালে এ কথা জানাল সংশ্লিষ্ট সূত্র।
আজ ওই সূত্রের দাবি, ক্ষতিপূরণের টাকা দিতে পারবে না বলে কেন্দ্র জানানোর পরে ক্ষোভে ফেটে পড়েছিল রাজ্যগুলি। সেই আগুনে ঘি ঢালে আয়ের ঘাটতি পূরণে বাজার থেকে ধার করার প্রস্তাব। সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, সোমবারের বৈঠকে ক্ষতিপূরণ নিয়ে মোদী সরকারের সেই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করবে বিরোধী শাসিত সব রাজ্য। দাবি তুলবে, কর বাবদ আয়ের খাতে ঘাটতি মেটাতে তহবিল সরবরাহের বিকল্প ব্যবস্থা তৈরিরও। তবে খবর, তারা যে ভাবে ক্ষোভে ফুটছে, তাতে আলোচনার পরিবেশ যথেষ্ট তেতে রয়েছে। সেই ঝড়ের অভিঘাত কতটা হবে তা বুঝতে গোটা দেশের নজর এখন বৈঠকের দিকেই।
বিরোধী রাজ্যগুলি এর আগেই তোপ দেগেছিল, জিএসটি চালুর সময় দেওয়া ক্ষতিপূরণের প্রতিশ্রুতি করোনার ছুতোয় যে ভাবে ভাঙল কেন্দ্র, তা যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রতি নির্লজ্জ বিশ্বাসঘাতকতা। সূত্রের খবর, তারা মনে করে এই ক্ষতিপূরণ দেওয়ার সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা রয়েছে কেন্দ্রের। তা এড়ানোর পথ নেই। এ ভাবে কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে ডোবাতে চাইছে কি না, সেই প্রশ্ন আগেই তুলেছেন এ রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্র।
হিসেব বলছে, জিএসটি চালুর কারণে চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যগুলির আয় কমবে ৯৭,০০০ কোটি টাকা। আর ২.০৩ লক্ষ কোটি কমবে করোনা-সঙ্কটে। সেস তহবিলে যে অর্থ রয়েছে, তা থেকে ৬৫,০০০ কোটি ক্ষতিপূরণ দিতে পারবে কেন্দ্র। তার পরেও বাকি থাকবে ২.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা। মোদী সরকারের প্রথম প্রস্তাব, ওই ৯৭,০০০ কোটি ধার করুক রাজ্য। যার সুদ মেটানো হবে সেস তহবিল থেকে। দ্বিতীয় প্রস্তাব, ওই ২.৩৫ লক্ষ কোটি শর্তসাপেক্ষে ধার নিক রাজ্যগুলি। যার সুদ রাজ্যগুলিকে দিতে হবে। আসল কাটা হবে সেস তহবিল থেকে। কোনও ক্ষেত্রেই ওই ৯৭,০০০ কোটি রাজ্যের ঋণ ধরা হবে না।
২১টি বিজেপি শাসিত বা সমর্থিত রাজ্য রাজি হয়েছে ঘাটতি মেটানোর জন্য ওই ৯৭,০০০ কোটি ঋণ নিতে। আর পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, দিল্লি, তেলঙ্গানা, ছত্তীসগঢ় ও তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রীরা ঋণ-প্রস্তাবের বিরোধিতা করে চিঠি লিখেছেন কেন্দ্রকে। তাঁদের পাল্টা যুক্তি, কেন্দ্র বরং ধার করে ক্ষতিপূরণ দিক। আর কেন্দ্র বলছে, টাকা নেই। তার উপর রাজ্যকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্যও নয় তারা।