প্রতীকী চিত্র।
অতিমারির ধাক্কায় গত অর্থবর্ষে ৭.৩% তলিয়ে গিয়েছে জিডিপি। ধাক্কা লেগেছে কর আদায়ে। তবে তার মধ্যেই টানা ছ’মাস ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি জিএসটি আদায় হয়েছিল। সেই ধারা বজায় রয়েছে চলতি অর্থবর্ষেও। এপ্রিলের ১.৪১ লক্ষ কোটির রেকর্ডের পরে মে মাসেও এই খাতে আদায় হয়েছে ১.০২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। তবে এতে স্বস্তি মিলছে না এখনই। বিশেষজ্ঞদের একাংশের বক্তব্য, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ থেকে রক্ষা পেতে বিভিন্ন রাজ্যে যে লকডাউন চালু হয়েছিল, তা বজায় ছিল মে মাস জুড়েই। ফলে ২৭% আদায় কমা খুবই স্বাভাবিক। এই পরিস্থিতিতে রাজকোষে কতটা ধাক্কা লাগছে, তা দেখার জন্য আগামী কয়েক মাসের সংখ্যায় নজর রাখতে হবে। যদিও অন্য অংশের বক্তব্য, দিনে চার লক্ষ সংক্রমণ নিয়েও গত মাসে যে পরিমাণ কর বাবদ আয় হয়েছে, তা অর্থনীতির পক্ষে যথেষ্ট আশাজনক।
লকডাউনের মধ্যে গত বছরের এপ্রিলে জিএসটি সংগ্রহ নেমেছিল ৩২,১৭২ কোটি টাকায়। লকডাউন শিথিল হয়ে অর্থনীতি ধীরে ধীরে সচল হতেই বাড়তে থাকে কর সংগ্রহ। এই নিয়ে টানা আট মাস আদায় ১ লক্ষ কোটির উপরে থাকল। শনিবার অর্থ মন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে, মে মাসে কেন্দ্রীয় জিএসটি আদায় হয়েছে ১৭,৫৯২ কোটি টাকা, রাজ্য জিএসটি ২২,৬৫৩ কোটি, সম্মিলিত জিএসটি ৫৩,১৯৯ কোটি। আর সেস বাবদ এসেছে ৯২৬৫ কোটি টাকা। সব মিলিয়ে কর আদায় অবশ্য গত বছরের মে মাসের চেয়ে ৬৫% বেশি।
মন্ত্রক অবশ্য জানিয়েছে, মে মাসে জিএসটি আদায় আরও বাড়তে পারে। এমনিতেই ৫ কোটি টাকার বেশি আয় করা সংস্থাগুলিকে ৪ জুন পর্যন্ত রিটার্ন জমার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তার উপরে ওই অঙ্কের কম আয়ের ছোট করদাতাদের ক্ষেত্রে সেই সময়সীমা জুলাইয়ের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। ফলে মে মাসের পুরো হিসেব পেতে এখনও সময় লাগবে। নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমারের মতে, জিএসটি আদায় বৃদ্ধির হাত ধরে সরকার আরও বেশি করে লগ্নি এবং পরিকাঠামোয় খরচ করতে পারবে। করোনার আবহে যা জরুরি।
তবুও এখনই অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর প্রমাণ হিসেবে একে এগিয়ে দিতে রাজি নয় শিল্প মহল এবং উপদেষ্টা সংস্থাগুলির একাংশ। তারা বলছে, ১ লক্ষের বেশি আদায় হওয়ায় আশা করা ভাল। কিন্তু সেটা আত্মতুষ্টিতে পরিণত হলে মুশকিল। বরং দ্বিতীয় ঢেউ কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর জন্য জমি তৈরিতে মন দেওয়া এখন বেশি জরুরি। নজর রাখতে হবে তৃতীয় ঢেউয়ের দিকেও।