প্রতীকী ছবি।
সাত দিনের ব্যবধানে প্রায় একই জায়গায় দাঁড়িয়ে বেকারত্বের হার। গ্রামে, শহরে, সারা দেশেও। বিশেষজ্ঞদের মতে, লকডাউন শিথিলের পরে ওই হার এক মাসে কমেছে অনেকখানি। কিন্তু অর্থনীতির চাকায় গতি ফিরতে শুরু না-করলে, এখান থেকে তাকে দ্রুত টেনে নামানো শক্ত। কর্মী সংগঠনের একাংশের আবার দাবি, খাতায়-কলমে বেকারত্ব কমছে ঠিকই। কিন্তু তেমনই অনেক কম মজুরিতে, কম দক্ষতার কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে।
উপদেষ্টা সংস্থা সিএমআইই-র হিসেব, ২১ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে দেশে বেকারত্বের হার ছিল ৮.৪৮%। সেখানে ২৮ জুন শেষ হওয়া সপ্তাহে তা ৮.৫৯%। গ্রামে ৭.২৬% থেকে বেড়ে ৭.৬২%। আর শহরে ১১.১৯% থেকে কমে ১০.৬৯%।
এপ্রিল, মে-তে বেকারত্বের হার যেখানে ২০ থেকে ২৬ শতাংশের মধ্যে ঘোরাফেরা করছিল, সেখানে তা ৭-৮ শতাংশের ঘরে নামা স্বস্তির। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের অনেকে বলছেন, এই ‘উন্নতি’ মূলত লকডাউন শিথিলের পরে বহু অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী এবং স্বনির্ভরেরা কাজ ফিরে পাওয়ায়। কিন্তু এখন থেকে কাঙ্ক্ষিত হারে নামতে অর্থনীতির ইঞ্জিনে গতি ফেরা জরুরি।
সম্প্রতি গরিব কল্যাণ রোজগার প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারের দাবি, লকডাউনের সময়ে যে পরিযায়ী শ্রমিকেরা ভিন্ রাজ্য থেকে কাজ হারিয়ে ঘরে ফিরেছেন, এর দৌলতে নিজের গ্রামে কাজ পাবেন তাঁদের অনেকে। কিন্তু এআইটিইউসি-সহ একাধিক ট্রেড ইউনিয়নের অভিযোগ, শহরে যাঁরা দৈনিক ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা মজুরিতে নির্মাণ শিল্প বা কল-কারখানায় কাজ করছিলেন, তাঁদের সকলকে এখন দিনে ১৫০-১৮০ টাকায় কাজ করতে হবে। আয় কমবে। দাম পাবে না দক্ষতা। সব জায়গায় দক্ষতা অনুযায়ী কাজের সুযোগই পাবেন না কর্মীরা।
শিল্পেরও আশঙ্কা, পরিযায়ীরা ঘরে ফেরায় আগামী দিনে টান পড়বে দক্ষ কর্মীর জোগানে। যদিও অর্থমন্ত্রীর আশ্বাস, এই ব্যবস্থা ১২৫ দিনের। এরই মধ্যে সিএমআইই-র হিসেব, আলোচ্য সাত দিনে শহরে বেকারত্ব কমেছে। বরং তা বেড়েছে গ্রামে! বিশেষজ্ঞদের মতে, অনেক শহরে বহু কারখানা, কাজের জায়গা খোলেনি। খুললেও, কাজ পাচ্ছেন ৩০-৫০ শতাংশ। তাই অনেকেই তার সন্ধান করছেন গ্রামে ফিরে গিয়ে। যে কারণে বিপরীত ছবি।