বানতলা চর্মনগরী তৈরির পরেও ঠাঁই পায়নি তারা। অপেক্ষার প্রহর গোনা চলেছে দীর্ঘ দেড় দশকেরও বেশি। অবশেষে খানিকটা স্বস্তি ১৪৭টি ক্ষুদ্র ট্যানারি সংস্থার। বানতলার কঠিন বর্জ্য ফেলতে চর্মনগরীর লাগোয়া আন্দুলগুড়ি মৌজায় রাজ্য যে ৫০ একর জমি চিহ্নিত করেছিল, তার ১০ একর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে তাদের। বাকি ৪০ একর থাকবে বর্জ্যের জন্য। ছোট সংস্থাগুলিকে রাজ্যই গড়ে দেবে পরিকাঠামো। এমন ভাবে, যাতে ট্যানারিগুলি এক ছাতার তলায় থেকে উৎপাদনের কাজ চালাতে পারে।
সূত্রের খবর, প্রত্যেকের জন্য ১৫০-২০০ বর্গমিটার করে স্থায়ী জায়গা তৈরি করবে রাজ্য। গড়বে বর্জ্য পরিশোধন ব্যবস্থা। চর্মশিল্পের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি নিয়ে সকলের জন্য হবে একটি সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্রও। আশা, রাজ্যের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প দফতরের উদ্যোগে শীঘ্রই কাজ শুরু করতে পারবে ট্যানারিগুলি।
প্রায় তিন-চার পুরুষ ধরে তিলজলা, তপসিয়া অঞ্চলে চর্মশিল্পে যুক্ত শ্যামবাবু রাম, সারদা দেবী, মনোজ কুমার দাস, সতনাম রামদের বাড়ির মতো শতাধিক পরিবার। তাঁদের বাবা-ঠাকুরদাদের অধিকাংশই বিহারের বৈশালী জেলা থেকে রাজ্যে এসেছিলেন চামড়ার কাজ করতে। অনেকের আবার ঠিকানা ছিল পঞ্জাব। তাঁরা বড় ট্যানারির অব্যবহৃত চামড়া প্রক্রিয়াকরণ করে পণ্য তৈরির কাঁচামাল (চামড়া) তৈরি করতেন। যা মূলত লাগত কল-কারখানায় ব্যবহারের দস্তানা তৈরিতে। ইতিমধ্যেই সেই দস্তানা তৈরির ক্ষেত্রে ভারতে একেবারে প্রথম সারিতে পশ্চিমবঙ্গ। তা রফতানিও হয়।
ঠিকুজি
যোগ হচ্ছে ৫০ একর
ভাগ-বাটোয়ারা
অথচ বানতলা চর্মনগরী তৈরির পরে সেখানে ঠাঁই মেলেনি ওই সব ছোট ট্যানারির। সেগুলির মালিক সংগঠনের অন্যতম নেতা কৈলাশ দাসের অভিযোগ, বানতলায় জায়গা দেওয়ার নাম করে সে সময় পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম তাঁদের থেকে কিছুটা টাকাও নিয়েছিল। কিন্তু জায়গার ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে ব্যবসা বন্ধ করতে বাধ্য হন অনেকে। জীবিকা নির্বাহের তাগিদে অনেকে কাজ খুঁজে নেন বড় ট্যানারিতে।
ক্ষুদ্র শিল্প দফতরের সচিব রাজীব সিংহের দাবি, চর্মশিল্পে ছোট ট্যানারিগুলির ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষত দস্তানা তৈরির যে চামড়া তারা বানায়, তার কদর বিশ্ব জোড়া। তাই বানতলার উৎপাদনের সঙ্গে সেগুলিকে জোড়ার এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের চর্মশিল্প লাভবানই হবে।