প্রতীকী ছবি।
কর্মী প্রভিডেন্ট ফান্ডে (ইপিএফ) ন্যূনতম পেনশনের অঙ্ক এখন মাসে ১,০০০ টাকা। এই অঙ্ক বাড়িয়ে ২,০০০ টাকা করার ব্যাপারে বিভিন্ন মহলে আলোচনা চলছে। কিন্তু পিএফ দফতর সূত্রের খবর, অবসরপ্রাপ্ত সদস্যদের ১,০০০ টাকা পেনশন দেওয়ার জন্য যে ভর্তুকি দিতে হয়, তা-ই কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। প্রশ্ন উঠেছে, এই অবস্থায় পেনশন বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হলে বর্ধিত ভর্তুকির অঙ্ক আসবে কোথা থেকে?
২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে পিএফে ন্যূনতম পেনশন ১,০০০ টাকা করা হয়। ওই বাবদ অতিরিক্ত যে টাকা খরচ হয়, তা ভর্তুকি হিসাবে দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। অর্থাৎ, কারও পেনশন হিসেব কষে ৫০০ টাকা হলে, বাকি ৫০০ টাকা ভর্তুকি দেওয়ার কথা। কিন্তু পিএফের অছি পরিষদের প্রাক্তন সদস্য তথা এআইইউটিইউসির সাধারণ সম্পাদক শঙ্কর সাহার দাবি, সংস্থার দাবিহীন জমা-সহ বেশ কিছু খাতে যে টাকা আছে, তা থেকেই ওই ঘাটতি মেটানো হচ্ছে। কেন্দ্রের থেকে ভর্তুকি আসছে না।
এই অবস্থায় ন্যূনতম পেনশনের অঙ্ক বাড়ানো-সহ নানা বিষয় খতিয়ে দেখতে বুধবার বৈঠকে বসছে কেন্দ্রের তৈরি বিশেষ কমিটি। সূত্রের খবর, পেনশন বাড়ানো হলে বাড়তি খরচ বইতে কেন্দ্রের কাছে আর্জি জানাতে পারেন পিএফ কর্তৃপক্ষ।
মাসে ১,০০০ টাকা ন্যূনতম পেনশনের প্রকল্পে বছরে ভর্তুকি গুনতে হয় ১,১০০ কোটি। যা দেওয়ার কথা কেন্দ্রের। বিশেষ কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী, ন্যূনতম পেনশন ২,০০০ টাকা করা হলে ভর্তুকি দাঁড়াবে ৫,৫৯৮ কোটি। পিএফ দফতর সূত্রের খবর, সে ক্ষেত্রে কেন্দ্র যদি ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ না বাড়ায় ও সেই টাকা নিয়মিত জমা না দেয়, তা হলে ন্যূনতম পেনশনের দায়ভার বহন করা কঠিন। পাশাপাশি, পেনশন তহবিলে যে টাকা জমা পড়ে, তার ১.১৬% কেন্দ্রের দেওয়ার কথা। পিএফের অছি পরিষদের ওই প্রাক্তন সদস্যের দাবি, সেই টাকাও কেন্দ্র দীর্ঘ দিন ধরে মেটাচ্ছে না।
১৯৯৫ সালে পিএফের পেনশন প্রকল্প চালু হয়েছিল। তার পরে আনা হয় পেনশনের একটি অংশ বিক্রি (কমিউটেশন) করে থোক টাকা পাওয়ার সুবিধা। সে ক্ষেত্রে পেনশনের পরিমাণ কিছুটা কমে যেত। কিন্তু একটি নির্দিষ্ট সময়ের পরে ফের পুরো পেনশনই পেতেন সংশ্লিষ্ট সদস্য। কিন্তু কয়েক বছর আগে পেনশন বিক্রির ব্যবস্থা বন্ধ করে দেওয়া হয়। সরকারি ক্ষেত্রে অবশ্য এই ব্যবস্থা এখনও চালু রয়েছে। পিএফে তা ফের চালু করা যায় কি না, সে বিষয়ে আলোচনা চলছে বিশেষ ক্ষমতা সম্পন্ন কমিটিতে। রিপোর্টে তারা জানিয়েছে, সে ক্ষেত্রে পিএফ দফতরের উপরে ওই বাবদ খরচের দায় চাপবে ৬৫০ কোটি টাকার মতো। প্রশ্ন উঠেছে, প্রকল্পটি ফিরিয়ে আনা হলে এই টাকারই বা জোগাড় হবে কোথা থেকে?