ফাইল চিত্র।
বছর দুয়েক আগে রাষ্ট্রায়ত্ত টেলি সংস্থা বিএসএনএল এবং এমটিএনএলের পুনরুজ্জীবন প্রকল্প ঘোষণার সময়ে কেন্দ্র জানিয়েছিল, সংস্থা দু’টির অব্যবহৃত জমি বিক্রি এবং ভবন ও আবাসন ভাড়ায় বা লিজ়ে দিয়ে আয়ের পথ খোলা হবে। এ বার সেই সূত্রে বিএসএনএলের ভবন বা আবাসনের অংশ ভাড়া বা লিজ় নিতে সরকারি দফতর বা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বলার জন্য বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবদের চিঠি দিলেন টেলিকম সচিব কে রাজারামন। এ রাজ্যে বিএসএনএলের দুই শাখা ক্যালকাটা টেলিফোন্স (ক্যাল টেল) ও ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল ইতিমধ্যেই এমন কয়েকটি ভবন ও আবাসনকে চিহ্নিত করেছে। কিছু ক্ষেত্রে ব্যাঙ্ক, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে চুক্তিও হয়েছে তাদের।
কেন্দ্রীয় আমলাদের চিঠি দিলেও রাজারামন সেখানে বিভিন্ন রাজ্যের সরকারি দফতরকেও ওই সুবিধা দেওয়ার কথা বলেছেন। এর ফলে বিএসএনএলের ধার মেটানো ও মূলধনী লগ্নির পুঁজি জোগাড়ে সুবিধা হবে বলে মত তাঁর। পুনরুজ্জীবন প্রকল্প অনুযায়ী, ভবিষ্যতে বিএসএনএলেই মিশে যাওয়ার কথা এমটিএনএলের।
ক্যাল টেলের সিজিএম দেবাশিস সরকার শুক্রবার জানান, প্রথম পর্যায়ে টেলিফোন ভবন, সল্টলেক ও বড়বাজারের তিনটি ভবনের একাংশ (৮৮০০ বর্গ ফুট) স্টেট ব্যাঙ্ক-সহ বিভিন্ন সরকারি দফতর ও সংস্থাকে ভাড়া দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে মাসে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা মিলবে। এর বাইরে আরও ১৬টি ভবনের (১.৪৭ লক্ষ বর্গ ফুট) একাংশ চিহ্নিত করা হয়েছে। বাজারদর অনুসারে এই সব সম্পত্তির ভাড়া বাবদ মাসে ২ কোটি আয়ের লক্ষ্য রয়েছে। তবে তাঁর দাবি, বিএসএনএলের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বজায় রেখেই ভাড়া দেওয়া হবে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্কল সূত্রের খবর, হলদিয়া, খড়্গপুর, আলিপুর, বাঁকুড়া, কোচবিহারের মতো কয়েকটি জায়গায় ইতিমধ্যে এই প্রক্রিয়া কার্যকর হয়েছে। তাদের লক্ষ্য, বছরে ভাড়া বাবদ অন্তত ২২ কোটি টাকা আয়। এই সার্কলও সরকারি, বেসরকারি উভয় ধরনের সংস্থাকেই ভাড়া বা লিজ় দিতে আগ্রহী।
দেবাশিসবাবু জানান, উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির প্রক্রিয়াও শুরু করেছে বিএসএনএল। মধ্যমগ্রামে ১১.৬৫ একর জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহেই সেটির নিলাম হওয়ার কথা। এ ছাড়া দমদম, কল্যাণী, মানিকতলা ও কলকাতার চিহ্নিত করা হয়েছে আরও চারটি জমি।
প্রসঙ্গত, কেন্দ্রের লগ্নি ও সরকারি সম্পদ পরিচালনা দফতর সম্প্রতি বিএসএনএলের কিছু সম্পত্তি বিক্রির জন্য ন্যূনতম মোট ৬৬০ কোটি দর রেখেছে। এমটিএনএলের ক্ষেত্রে তা ৩১০ কোটি। বিএসএনএলের সিএমডি পি কে পুরওয়ার জানিয়েছিলেন, প্রথম পর্যায়ের এই প্রক্রিয়া দেড় মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ করাই তাঁদের লক্ষ্য।