ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রণব সেন
মোদী সরকার ও শিল্পের একাংশের দাবি, দেশের অর্থনীতি ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। কিন্তু তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে নারাজ অনেক বিশেষজ্ঞ। যাঁদের অন্যতম পরিসংখ্যান মন্ত্রকের স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ও ইন্টারন্যাশনাল গ্রোথ সেন্টারের কান্ট্রি ডিরেক্টর প্রণব সেন। বুধবার ভারত চেম্বারের ওয়েবিনারে তাঁর দাবি, গ্রামীণ অর্থনীতির ঘুরে দাঁড়ানোর ছবিও সর্বত্র স্পষ্ট নয়। প্রণবের সওয়াল, রাজকোষ ঘাটতি বাড়ুক, কিন্তু চাহিদা বাড়াতে আরও ত্রাণ দিক কেন্দ্র। শুধু এখন নয়, টানা তিন বছর ধরে। সরাসরি মানুষের হাতে নগদ পৌঁছনো, পরিকাঠামো-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে লগ্নি মিলিয়ে যার অঙ্ক হতে হবে প্রায় ৮ লক্ষ কোটি টাকা। এ দিন অবশ্য ফের ত্রাণের আশ্বাস দিয়েছে কেন্দ্র।
গাড়ি বিক্রি থেকে জিএসটি আদায়, সম্প্রতি কিছু ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হিসেব আসতেই ফের অর্থনীতির চাকা ঘোরার দাবি করেছে সরকার। এ দিন সিআইআইয়ের প্রেসিডেন্ট উদয় কোটাকও একাধিক পরিসংখ্যান দেখিয়ে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে। প্রত্যাশার অনেক আগেই অর্থনীতির হাল ফিরবে। প্রণববাবুর অবশ্য আগেও বলেছেন, এটা দীর্ঘ দিন জমে থাকা চাহিদার বহিঃপ্রকাশ। এ দিন তাঁর দাবি, এখনও পর্যন্ত চাহিদা বৃদ্ধির জন্য ত্রাণের ভাগ মাত্র ০.৮%। ফলে আরও ত্রাণ জরুরি। গাড়ি শিল্পের মতো অনেকেই বিক্রিবাটা বাড়াতে নাগাড়ে জিএসটি ছাঁটার সওয়াল করলেও, প্রণববাবুর মতে, কর কমলেই চাহিদা ফিরবে এমনটা নয়। বরং মানুষের হাতে ত্রাণের টাকা গেলে কেনাকাটা বাড়বে, বাড়বে কর আদায়ও। যার হাত ধরে পরে সেই ঘাটতি কমানো সহজ হবে।
গ্রামীণ অর্থনীতির উন্নতির তত্ত্ব নিয়েও সন্দিহান প্রণববাবু। বলেছেন, যে রাজ্যে রবি চাষ ও ফসল বিক্রি ভাল হয়েছে, সেখানে পরিস্থিতি ভাল। কিন্তু বহু রাজ্যে খরিফ শস্যের ছবিটা স্পষ্ট নয়। অনেক জায়গায় পরিযায়ী শ্রমিকেরা ফিরেছেন কাজ হারিয়ে। চাহিদা বাড়াতে জনধন প্রকল্পে ৫০০ টাকা করে নয়, ৩০০০-৪০০০ দেওয়ার সওয়াল করেছেন তিনি।
এ দিনই পিএইচডি চেম্বারের সভায় অর্থ মন্ত্রকের প্রিন্সিপ্যাল আর্থিক উপদেষ্টা সঞ্জীব সান্যালের অবশ্য আশ্বাস, ত্রাণের প্রয়োজনীয়তা জানে সরকার। ঠিক সময়ই তা দেওয়া হবে।