ছবি: সংগৃহীত
গত সপ্তাহে দিঘায় শিল্প সম্মেলনে বীরভূমের প্রস্তাবিত ডেউচা-পাঁচামি কয়লা ব্লকের আংশিক কাজ শুরুর কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, সাত দিনের মধ্যে মুখ্যসচিব পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন। বুধবার রাত পর্যন্ত নবান্ন ও জেলার প্রশাসন সূত্রের খবর, আজ, বৃহস্পতিবার মুখ্যসচিব রাজীব সিংহ-সহ পদস্থ আমলাদের উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধিদল সেই সূত্রে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করতে সিউড়ি যাচ্ছেন। কার্যত এই প্রকল্প নিয়ে এটিই প্রথম প্রশাসনিক বৈঠক।
সম্প্রতি ওই কয়লা ব্লকটি রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমকে বরাদ্দ করেছে কয়লা মন্ত্রক। সূত্রের খবর, কেন্দ্রের সঙ্গে ইতিমধ্যে নিগমের চুক্তি হলেও মঙ্গলবারই চূড়ান্ত ছাড়পত্র এসেছে। মুখ্যসচিবের সঙ্গে বিদ্যুৎসচিব এস সুরেশ কুমার, ভূমি-সচিব মনোজ পন্থ, নিগমের চেয়ারম্যান পি বি সেলিম-সহ নিগমের অন্য কর্তারাও যাচ্ছেন।
কেন্দ্র ও রাজ্যের দাবি, মহম্মদবাজারের ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১টি মৌজায় ২১০ কোটি টন কয়লার ভাণ্ডার আছে। তবে গোটা এলাকায় প্রায় ১৯ হাজার বাসিন্দার মধ্যে প্রায় সাত হাজার আদিবাসী। প্রকল্প হলে তাঁদের ভবিষ্যৎ ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা আদিবাসী নেতা ও পরিবেশবিদদের। যদিও বাসিন্দাদের সম্মতি ও পুনর্বাসন ছাড়া এগোবেন না বলে আশ্বাস দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, প্রাথমিক ভাবে বসতি না-থাকা অংশে উত্তোলন হবে। বিদ্যুৎমন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ও এ দিন পরিবেশ ও পুনর্বাসনকে অগ্রাধিকার দিয়ে বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ৬৬ সপ্তাহের মধ্যে সব নিয়ম সারার নির্দেশ দিয়েছেন। তার প্রাথমিক প্রস্তুতি কাল থেকে শুরু হবে।’’
তবে আদিবাসী গাঁওতার নেতা সুনীল সরেন বলেন, ‘‘মানুষ নতুন করে উন্নয়নের নামে উচ্ছেদ হতে চান না। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা না-বলে কয়লা তোলা যাবে না। অন্যথায় সরকারের আগ্রাসন নীতির বিরুদ্ধে গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আন্দোলন করবেন তাঁরা।’’ যদিও জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসুর দাবি, আগ্রাসনের কিছু নেই। এটি প্রাথমিক বৈঠক। প্রাথমিক তথ্য ও পরিসংখ্যান নিয়ে তাঁরা প্রস্তুত।