লগ্নির ডাক: ভারত-সুইডেন বাণিজ্য সম্মেলনে অর্থমন্ত্রী। নয়াদিল্লিতে মঙ্গলবার। পিটিআই
চলতি অর্থবর্ষের দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৪.৫ শতাংশে নামায় সারা দেশ যখন সরগরম, তখন সংস্কারের বার্তা দিচ্ছেন অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। সোমবার সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন কর্পোরেট কর ছাঁটার সুবাদে ভারতের ম্যানুফ্যাকচারিং হাব (কল-কারখানায় উৎপাদনের কেন্দ্র) হবে। আর মঙ্গলবার ভারত-সুইডেন বাণিজ্য সম্মেলনের মঞ্চ থেকে জানালেন, লগ্নির আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠতে কেন্দ্র আরও একগুচ্ছ সংস্কার আনতে দায়বদ্ধ। অর্থমন্ত্রী এ ভাবে লগ্নির ডাক দিলেও, এ দিনই ভারতের বৃদ্ধির পূর্বাভাসে ফের চলল কাঁচি। এ বার উপদেষ্টা সংস্থা গোল্ডম্যান স্যাক্সের। চলতি অর্থবর্ষে তার হার কমে ৫.৩% হওয়ার পূর্বাভাস দিল তারা। হালে যে পথে হেঁটেছে অনেকেই।
সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, লগ্নি টানতে মরিয়া সরকার যতই সংস্কারের বার্তা দিক, একের পর এক সংস্থার বৃদ্ধির পূর্বাভাস ছাঁটাই তাতে কার্যত জল ঢালছে। কারণ, লগ্নিকারীদের কাছে তা অর্থনীতির ঝিমুনি না-কাটারই ইঙ্গিত দিচ্ছে। রাজকোষ ঘাটতি বেলাগাম হওয়ার ইঙ্গিতও দিয়েছে গোল্ডম্যান।
তার উপরে এ দিনই জানা গিয়েছে মূল্যায়ন সংস্থা ফিচ রেটিং ভারতের ব্যাঙ্কগুলি সম্পর্কে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি রেখেছে নেতিবাচক-ই। দাবি করেছে, শ্লথ অর্থনীতি আর্থিক ভাবে দুর্বল ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে অনুৎপাদক সম্পদের বোঝা আরও বাড়াতে পারে। ঋণ দেওয়া বাড়াতে হলে ২০২০-২১ সালের মধ্যে বাড়তি প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা পুঁজি লাগবে তাদের।
অর্থনীতি নিয়ে উদ্বেগ বাড়িয়ে মুডি’জ়ের আবার দাবি, দেশে ইস্পাতের চাহিদা কমবে গাড়ি শিল্পে ও কারখানায় উৎপাদন কমায়। পাশাপাশি, সংসদে খোদ সরকার বলেছে, অক্টোবরে দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন ১২% কমেছে। মূলত কৃষি ও বাণিজ্যে কর্মকাণ্ড ধাক্কা খাওয়াতেই।
নির্মলা অবশ্য বলছেন, সংস্কারেই বিশ্বাসী সরকার। তাতে ভর করেই এগোবে দেশ। আর্থিক বিষয়ক সচিব অতনু চক্রবর্তীর দাবি, রেটিং সংস্থা এসঅ্যান্ডপি ভারতের রেটিং একই (BBB-) রেখেছে। দৃষ্টিভঙ্গিও রেখেছে স্থিতিশীল। মুডি’জ় সম্প্রতি তা নেতিবাচকে নামিয়েছিল।