প্রতীকী ছবি।
কলকাতায় ৪০ হাজার টাকা ছাড়ল সোনার দাম। শুক্রবার শহরে প্রতি ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট পাকা সোনার দাম আগের দিনের থেকে ৮৪৫ টাকা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪০,৫১০ টাকা। এর আগে এত বেশি দামে কখনও সোনা বিকোয়নি কলকাতায়।
দোকানে গিয়ে সোনা কেনার সময় অবশ্য আরও খানিকটা গাঁটের কড়ি খসাতে হবে। কারণ, এই দামের সঙ্গে যুক্ত হবে ৩ শতাংশ জিএসটি। ফলে মোট দাম ৪১ হাজার টাকা পেরিয়ে যাবে। এ দিন কলকাতায় ১০ গ্রাম গয়নার সোনার দাম ছিল ৩৮,৪৩৫ টাকা। বৃহস্পতিবারের থেকে ৮০৫ টাকা বেশি।
তবে শুধু ভারতের বাজারে নয়, সোনার দাম বেড়েছে বিশ্ব জুড়েই। আমেরিকার ড্রোন আক্রমণে ইরানের সেনা-কর্তার মৃত্যুকে ঘিরে রাজনৈতিক আবহাওয়া ঘোরালো হতেই এ দিন বিশ্ব বাজারে সোনার দাম এক লাফে ১ শতাংশেরও বেশি বেড়ে যায়।
সেটা কি বাড়তেই থাকবে? সোনা ব্যবসায়ী মহলের মতে, এই দাম বৃদ্ধির পিছনে কোনও ব্যবসায়িক কারণ নেই। ফলে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি আর বেশি ঘোরালো না-হলে দাম ক’দিনের মধ্যেই কিছুটা কমবে।
আরও পড়ুন-তেলের দাম ঘিরে তৈরি হচ্ছে আশঙ্কা
তবে ওই দাম কমাও সাময়িক হবে বলেই ধারণা স্বর্ণ ব্যবসায়ী মহলের। কারণ, ভারতের পাশাপাশি গোটা বিশ্বে আর্থিক সমস্যা চলছে। সাধারণ ভাবে দেখা গিয়েছে, আর্থিক ক্ষেত্রে সমস্যা বাড়লে লগ্নিকারীদের অনেকেই সোনাকে বিনিয়োগের নিরাপদ জায়গা হিসেবে বেছে নেন।
কলকাতার বুলিয়ন মার্চেন্ট হর্ষদ অজমেঢ়া বলেন, ‘‘আমেরিকার শীর্ষ ব্যাঙ্ক ফেডারেল রিজার্ভ খুব শীঘ্রই সুদের হার কমাতে পারে বলে খবর। সেটা হলে সোনায় লগ্নি দ্রুত বাড়বে। ফলে দামও বাড়বে।’’
সোনার দাম অবশ্য বেশ কিছু দিন ধরেই বাড়ছে। গত বছর সেপ্টেম্বরে ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দাম বেড়ে হয়েছিল ৩৯,৮১০ টাকা। এ দিনের আগে সেটাই ছিল রেকর্ড। তার পরে অবশ্য দাম কিছুটা কমে।
তবে ইরানের পাশাপাশি সোনার দামবৃদ্ধির পিছনে আরও কিছু কারণ কাজ করছে বলে মনে করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। অল ইন্ডিয়া জেম অ্যান্ড জুয়েলারি ডোমেস্টিক কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান শঙ্কর সেন বলেন, ‘‘দেশে সোনার দাম বাড়ার অন্যতম প্রধান কারণ ডলারের ঊর্ধ্বমুখী দর। সোনা আমদানি করতে হয় ডলার দিয়ে। আন্তর্জাতিক বাজারে সোনার দামে হেরফের না-হলেও যদি ডলারের দাম বেড়ে যায়, তা হলে দেশে সোনার দাম বাড়ে। কারণ, সে ক্ষেত্রে একই পরিমাণ ডলারের জন্য আগের থেকে বেশি টাকা খরচ করতে হয়।’’