প্রতীকী ছবি।
চড়া দামের কারণে রামনবমী বা পয়লা বৈশাখে খুব একটা ভাল বিক্রির মুখ দেখেনি স্বর্ণ শিল্প। তাদের চিন্তা আরও বাড়াচ্ছে হলুদ ধাতুটির ক্রমাগত বেড়ে চলা দর। সোমবার কলকাতায় প্রতি ১০ গ্রাম ২৪ ক্যারেট সোনার দাম পৌঁছেছে ৫৪,৩০০ টাকায় (জিএসটি বাদে)। গত ৫ এপ্রিল তা ছিল ৫২,১০০ টাকায়। দু’সপ্তাহে দর বৃদ্ধি ২২০০ টাকা। এ দিন হলমার্ক করা প্রতি ১০ গ্রাম গয়নার সোনার (২২ ক্যারেট) দামও দাঁড়িয়েছে ৫২,৩০০ টাকা। এই অবস্থায় ক্রেতারা আগামী দিনে কতটা কেনাকাটায় উৎসাহী হবেন, তা ভাবাচ্ছে সোনা ব্যবসায়ীদের। কারণ, এমনিতেই মূল্যবৃদ্ধির জেরে নাজেহাল দশা সাধারণ মানুষের।
এর আগে করোনার প্রথম ঢেউয়ের মধ্যে ২০২০ সালের ৭ অগস্ট ৫৬,৯৬০ টাকা দর দেখেছিল পাকা সোনা। যা এখনও পর্যন্ত রেকর্ড। তার পরে এ বছর ফেব্রুয়ারির শেষ দিকে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর সময়ও লাগাতার বাড়তে দেখা গিয়েছিল দাম। যার কারণ, শেয়ার বাজার-সহ লগ্নির বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঝুঁকি এড়াতে লগ্নিকারীদের সোনার নিশ্চয়তায় ভরসা রাখার প্রবণতা। বিশেষজ্ঞদের মতে, অর্থনীতিতে অনিশ্চয়তা থাকলে সোনা দামি হওয়াই দস্তুর। তার উপরে আমদানির খরচ বেড়েছে টাকার সাপেক্ষে ডলারের দাম বাড়ায়। এখনও সেটাই ঘটতে দেখা যাচ্ছে।
ছোট ও মাঝারি গয়নার দোকানের মালিকরা জানিয়েছেন যে, গতবারের তুলনায় এ বার পয়লা বৈশাখে বিক্রি প্রায় ৩০% কম হয়েছে। গয়নার বাজার খারাপ হওয়ার ফলে মাথায় হাত পড়েছে কারিগরদেরও। কারণ, সাধারণত তাঁদের মাস মাইনে নেই। তাঁদের আয় নির্ভর করে গয়নার বরাতের উপরে। প্রতিটি গয়নার তৈরির জন্য তাঁরা মজুরি পান। কিন্তু চড়া দামের কারণে ক্রেতারা হাত গুটিয়ে থাকলে সেই আয়ই ধাক্কা খাওয়ার সম্ভাবনা।
দাম যে শুধু সোনারই বাড়ছে, তা নয়। পিছিয়ে নেই রুপোও। সোমবার খুচরো রুপোর প্রতি কিলোগ্রামের দাম পৌঁছে গিয়েছে ৭০,৫৫০ টাকায়। লগ্নিকারীদের বিনিয়োগ তো রয়েইছে, তার উপরে বিভিন্ন শিল্পে রুপোর ব্যবহার রয়েছে। ফলে সব মিলিয়ে তার দাম আরও চড়ছে বলে জানাচ্ছে বাজার মহল। এই পরিস্থিতিতে হাল ফেরার জন্য আপাতত বিয়ের মরসুমের দিকেই তাকিয়ে স্বর্ণ শিল্পমহল।