গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
প্রথম ত্রৈমাসিকেই ছ’বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন ৫ শতাংশ আর্থিক বৃদ্ধির হার দেখেছিল দেশবাসী। তখন থেকেই আতঙ্ক জাঁকিয়ে বসছিল, পরের ত্রৈমাসিকে আরও পতন হবে জিডিপি বৃদ্ধির হারে। সেই আশঙ্কাকে সত্যি করেই বৃদ্ধির হার নামল ৪.৫ শতাংশে। শুক্রবার প্রকাশিত হল দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের জিডিপি বৃদ্ধির হার।
এই নিয়ে গত দেড় বছর ধরে টানা নিম্নমুখী জিডিপি। ছ’ বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। অর্থনীতিবিদদের সিংহভাগই মনে করছেন, জিডিপির ক্রমাগত এই পতনে মোদী সরকারের ৫ লক্ষ কোটি মার্কিন ডলার অর্থনীতির স্বপ্ন ক্রমেই দূরে সরছে।
২০১২-১৩ অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার তলানিতে নেমে দাঁড়িয়েছিল ৪.৩। তার পর থেকে ৫ শতাংশের নীচে কখনও নামেনি জিডিপি বৃদ্ধির হার। সে দিক থেকেও এই পতন রেকর্ড সৃষ্টি করেছে।
গত অর্থবর্ষে এই জুলাই-সেপ্টেম্বর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে আর্থিক বৃদ্ধির হার ছিল ৭ শতাংশ। এ বছর জুনে শেষ হওয়া প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার ৫ শতাংশ নেমে যাওয়ার পর থেকেই আতঙ্ক শুরু হয়েছিল অর্থনীতি মহলে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দগতি, দেশের বাজারে নতুন শিল্প-বিনিয়োগের অভাব, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির খারাপ পারফরম্যান্স, বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত, কর্মসংস্থানে ছাঁটাই ও পড়তি— সব কিছুর মিলিত প্রভাবেই অর্থনীতি তথা বৃদ্ধির হারে এমন দুর্দশা বলেই মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
বৃদ্ধির হারে লাগাতার এই পতন এবং প্রথম ত্রৈমাসিকে ছ’বছরের সর্বনিম্ন বৃদ্ধির হারের পর থেকেই উঁকি দিচ্ছে আর্থিক মন্দার সম্ভাবনা। কেন্দ্র অবশ্য কখনওই ‘মন্দা’ বলতে মানতে নারাজ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বারবার দাবি করে এসেছেন, এটা ‘মন্দা’ নয়— বৃদ্ধির হারে ‘শ্লথগতি’। অর্থাৎ আর্থিক বৃদ্ধি আশানুরূপ নয়। এমনকি, বৃহস্পতিবারও সংসদে একই দাবি করেছেন সীতারামন।
সারা বিশ্বে অর্থনীতির মন্থর গতির প্রভাবই এর জন্য দায়ী বলে দাবি করে নির্মলা আশ্বাস দিয়ে আসছিলেন, খুব শীঘ্রই ঘুরে দাঁড়াবে ভারতীয় অর্থনীতি। বাজার চাঙ্গা করতে কর্পোরেট করে ছাড়, ব্যাঙ্ক এবং টেলিকম সংযুক্তিকরণের মতো একাধিক পদক্ষেপ করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। কিন্তু তার পরেও জিডিপির পতন রোখা যায়নি। আর তাই দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের এই জিডিপি বৃদ্ধির হার প্রকাশিত হওয়ার পর ফের অশনি সঙ্কেত দেখছে সংশ্লিষ্ট সব মহল।