ফাইল চিত্র।
বিভিন্ন জটে মাঝে মধ্যে ধাক্কা খেলেও, রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানের জন্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেলের পাইপলাইন প্রকল্পের কাজ বেশ খানিকটা এগিয়েছে। উত্তরপ্রদেশের জগদীশপুর থেকে ইতিমধ্যেই হলদিয়ায় পৌঁছেছে সেই লাইন। তবে দুর্গাপুর থেকে হলদিয়া এবং ধামড়া (ওড়িশা) থেকে হলদিয়া— এই দু’টি লাইনের কাজ কবে শেষ হবে, তা নিয়ে জল্পনা কাটেনি। শুক্রবার ইন্ডিয়ান চেম্বারের এক সভায় গেলের কর্তারা জানালেন, সব কিছু ঠিকঠাক চললে ২০২৩ সালের মাঝামাঝি ওই কাজ শেষ হবে। তবে সময়ের মধ্যে তা করতে সহজে ও দ্রুততার সঙ্গে জমি ব্যবহারের অনুমোদন, কেন্দ্র ও রাজ্যের ছাড়পত্র এবং প্রশাসনিক খরচ কমানোর আর্জি জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট সমস্ত পক্ষ। কারণ, প্রকল্প রূপায়ণে দেরি হলে গ্যাসের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে।
রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস আনার জন্য ২০০৫ সালে গেলের সঙ্গে আলোচনার কথা জানান তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় বিষয়টি নিয়ে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। জমি ও প্রশাসনিক জটে যাতে কাজ বিঘ্নিত না হয়, সে জন্য জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছে নবান্ন। এ বছরের শুরুতে উত্তরপ্রদেশ থেকে দুর্গাপুর পর্যন্ত পাইপলাইন পৌঁছয়। প্রকল্পটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের শিল্প মহল কম খরচে দূষণহীন এই জ্বালানির জোগানের দিকে তাকিয়ে। এক বছরের মধ্যে কলকাতায় গ্যাসের জোগানের জন্য উত্তর ২৪ পরগনা পর্যন্ত পাইপলাইন তৈরির আশায় তারা।
এ দিন ইন্ডিয়ান চেম্বারের সভায় গেলের দুই কর্তা অসীম প্রসাদ এবং এস রায় মণ্ডল ২০২৩ সালের মধ্যে হলদিয়ায় দুই পাইপলাইন পৌঁছনোর কথা জানান। আপাতত কলকাতা-সহ রাজ্যের ১০টি জেলায় ওই গ্যাস বণ্টনের বরাত পেয়েছে আইওসি-আদানি গোষ্ঠীর কনসোর্টিয়াম, হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম এবং বেঙ্গল গ্যাস কোম্পানি (গ্রেটার ক্যালকাটা গ্যাস সাপ্লাই কর্পোরেশন ও গেলের যৌথ উদ্যোগ)। শিল্প সংস্থা ও বাড়িতে পাইপে গ্যাসের জোগান দেবে তারা। তৈরি হচ্ছে গাড়ির জ্বালানির জন্য সিএনজি স্টেশন-ও। অসীমবাবুর দাবি, এই গ্যাস শিল্পোৎপাদনে ও পরিবহণ ক্ষেত্রে জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হলে তার উপর যে যুক্তমূল্য কর (ভ্যাট) চাপবে, তা থেকেও রাজ্যের আয় হবে। হিসাব বলছে, ২০৩০ সালে এই গ্যাসের ব্যবহার প্রায় চার গুণ বাড়বে। সে ক্ষেত্রে রাজ্যের আয়ও বাড়বে।