খাদ্যপণ্যে মাথা তুলে হয়েছে ৩.৮১%। জানুয়ারিতে ছিল ২.৩৮%। ফাইল ছবি।
খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধির হার ৬ শতাংশের উপরে থাকলেও, পাইকারি বাজারে তা প্রায় দু’বছরের মধ্যে সব থেকে নীচে নেমে গেল। মঙ্গলবার সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ফেব্রুয়ারিতে তা দাঁড়িয়েছে ৩.৮৫%। তবে সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, এতে চিন্তা যতটা কমার কথা বাস্তবে ততটা কমছে না। কারণ, খাদ্যপণ্য দামি হয়েছে। অর্থনীতিবিদদের একাংশে মতে, গত বছর ফেব্রুয়ারিতে পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির উঁচু ভিতের উপর পা রেখে (১৩.৪৩%) এ বার তার হার এত কম দেখাচ্ছে।
পরিসংখ্যান বলছে, এই নিয়ে টানা ন’মাস পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি কমল। তা নেমেছে কারখানায় তৈরি পণ্য, জ্বালানি, অশোধিত তেল, বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশ, রাসায়নিক পদার্থ, গাড়ি ইত্যাদির। কিন্তু খাদ্যপণ্যে তা মাথা তুলে হয়েছে ৩.৮১%। জানুয়ারিতে ছিল ২.৩৮%। আগামী দিনে দাম নির্ভর করবে আবহাওয়া এবং সময়ে বর্ষা আসার উপরে, বলছেন বিশেষজ্ঞেরা।
গত মাসে খুচরো মূল্যবৃদ্ধি ছিল ৬.৪৪%। অর্থাৎ তা এখনও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের বেঁধে দেওয়া ৬% সহনসীমার বেশি। আর সেটা টানা দু’মাস ধরেই। জানুয়ারিতে ছিল ৬.৫২%। সংশ্লিষ্ট মহলের মতে, পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির মাথা নামানো ইতিবাচক হলেও রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্ক সুদ ধার্য করার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেয় খুচরো বাজারকে। ফলে টানা দু’মাস সেখানে মূল্যবৃদ্ধির হার ৬% পার করায় দেশে সম্ভবত ফের সুদ বাড়বে। একাংশের ধারণা, আগামী মাসে ঋণনীতির পর্যালোচনায় তা আরও অন্তত ২৫ বেসিস পয়েন্ট বেড়ে যেতে পারে।
পাইকারি মূল্যসূচক কমলেও নিশ্চিন্ত হওয়ার কারণ নেই, মন্তব্য পটনা আইআইটির অধ্যাপক রাজেন্দ্র পরামানিকের। তিনি বলেন, ‘‘অশোধিত তেল এবং উৎপাদন শিল্পে তৈরি পণ্যের দাম কমার কারণেই তা কমেছে। খাদ্যপণ্যের চড়া দামের জন্য খুচরো বাজারে পণ্যের মূল্যসূচক নিয়েও চিন্তা বাড়বে।’’
আর্থিক বিশেষজ্ঞ অনির্বাণ দত্ত বলেন, ‘‘পাইকারি মূল্যবৃদ্ধির হার এতটা নেমে যাওয়ার প্রতিফলন খুচরো বাজারে কেন হচ্ছে না, সেটা সরকারের খতিয়ে দেখা উচিত। সেই সঙ্গে সমস্ত খাদ্যপণ্যের দাম নীচে নামলে স্বস্তি ফিরবে।’’