—প্রতীকী চিত্র।
আমেরিকা ও চিনের মধ্যে শুল্ক যুদ্ধ শুরু হয়েছিল অতিমারির অনেক আগে। সেই অবস্থার উন্নতি তো হয়নি, বরং আরও ঘোরালো হয়েছে দুই তরফেই নজরদারির অভিযোগকে কেন্দ্র করে। তার উপরে চিনের বিভিন্ন পণ্যের উপরে শাস্তিশুল্ক চাপানোর কথা ভাবছে ইউরোপের বিভিন্ন দেশ। এই অবস্থায় বিশ্ব অর্থনীতি এবং সরবরাহ ব্যবস্থার কাঠামো বদলের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন আর্থিক বিশ্লেষকেরা। অনেকের ধারণা, তার থেকে ভাল মুনাফা ভারতেরও তোলার সম্ভাবনা রয়েছে। আজ নীতি আয়োগের প্রাক্তন ভাইস চেয়ারম্যান রাজীব কুমার বলেছেন, চলতি অর্থবর্ষে ভারতের জিডিপি বৃদ্ধির হার দাঁড়াতে পারে ৬.৫%। যে পূর্বাভাস দিয়েছে রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কও। তবে রাজীব জানিয়েছেন, এ দেশের তরুণ প্রজন্মের আকাঙ্ক্ষা পূরণ এবং তাদের জন্য যথেষ্ট সংখ্যায় কাজ তৈরি করতে গেলে ওই হার ৮ শতাংশে নিয়ে যাওয়া জরুরি। বিশেষজ্ঞদের মতে, আপাতত সেই সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। তবে এর ধারেপাশে পৌঁছতে গেলে বিশ্বের বৃহত্তম দুই আর্থিক শক্তির সংঘাত থেকে ফসল তুলতেই হবে।
গত দু’বছর ধরে বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থা তাদের উৎপাদন ব্যবস্থার একাংশ চিন থেকে অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশে সরানোর প্রক্রিয়া চালাচ্ছে। হার্ভার্ড বিজ়নেস স্কুলের গবেষক লরা আলফারোর নেতৃত্বে তৈরি হওয়া একটি গবেষণাপত্রে দাবি করা হয়েছে, এই পর্যায়ে আমেরিকার সংস্থাগুলির থেকে সবচেয়ে বেশি বিনিয়োগ টেনেছে ভিয়েতনাম এবং মেক্সিকো। তবে অনেকের আবার ব্যাখ্যা, চিনে কম খরচে বেশি উৎপাদনের সুবিধা পায় সংস্থাগুলি। এ ক্ষেত্রে চিনের নিকটতম প্রতিযোগী ভারত। মূল কারণ এ দেশের বিপুল মধ্যবিত্ত শ্রেণি এবং তরুণ প্রজন্ম। ব্রোকারেজ সংস্থা বার্কলেজ়ের মতে, আগামী পাঁচটি অর্থবর্ষে জিডিপি ৮% করে বাড়লে সারা বিশ্বের আর্থিক বৃদ্ধিতে বৃহত্তম অবদান রাখার জায়গায় পৌঁছতে পারবে ভারত। আজ বিশ্ব ব্যাঙ্ক চিনের এ বছরের বৃদ্ধির পূর্বাভাস (৫.১%) অপরিবর্তিত রাখলেও, ২০২৪ সালের পূর্বাভাস ছাঁটাই করে ৪.৮% থেকে ৪.৪ শতাংশে নামিয়েছে। ফলে আগামী অর্থবর্ষেও বৃহৎ অর্থনীতিগুলির মধ্যে বৃদ্ধির হারের নিরিখে শীর্ষে থাকতে পারে ভারত। এই অবস্থায় বহুজাতিক সংস্থাগুলিকে টেনে আনতে উৎপাদন ভিত্তিক ভর্তুকি (পিএলআই) প্রকল্প চালু করেছে কেন্দ্র। কাজের বাজারে তার প্রভাব স্পষ্ট না হলেও সরকারের দাবি, আগ্রহ প্রকাশ করেছে অনেকে।
আজ রাজীব বলেছেন, ‘‘গত ন’বছরে বিভিন্ন আর্থিক সংস্কারের ফলে জাতীয় অর্থনীতি উপকৃত হয়েছে।... সমস্যা একটাই। বেসরকারি লগ্নি এখনও প্রত্যাশা অনুযায়ী সাড়া দেয়নি।’’ তবে সে ক্ষেত্রে উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে বলে দাবি তাঁর।