নোট বাতিল কার্যকর করতে গিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের খরচ বেড়েছে। কমেছে আয়। তা বলে নিজেদের মুনাফার ভাগ ছাড়তে রাজি নয় কেন্দ্র। কারণ, তা হিসেব মতো না-পেলে গোলমাল বাঁধবে বাজেটের অঙ্কে। তাই শীর্ষ ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ডিভি়ডেন্ড বাবদ প্রাপ্য ওই টাকা আরও বেশি পরিমাণে আদায়ের জন্য তদ্বির শুরু করেছেন অর্থ মন্ত্রকের কর্তারা। অর্থ বিষয়ক সচিব সুভাষচন্দ্র গর্গ বলেন, ‘‘রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তহবিল থেকে বেশি অর্থ পেতে তাদের সঙ্গে আলোচনা চলছে সরকারের।’’
প্রতি বছরই রিজার্ভ ব্যাঙ্কের থেকে ডিভিডেন্ড পায় কেন্দ্র। এ বার বাজেটে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির অনুমান ছিল, তা হবে ৫৮ হাজার কোটি টাকা। কিন্তু শীর্ষ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, তারা ২০১৬-’১৭ সালের জন্য ৩০,৬৫৯ কোটি দেবে। তার আগের অর্থবর্ষের ৬৫,৮৭৬ কোটির তুলনায় অর্ধেকেরও কম। রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কম দিলে, অনুৎপাদক সম্পদে জেরবার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির পক্ষে তা পূরণ অসম্ভব। ফলে বাড়তে পারে রাজকোষ ঘাটতি।
কম ডিভিডেন্ড দেওয়ার কারণ যে নোট বাতিল, তা বুধবার প্রকাশিত শীর্ষ ব্যাঙ্কের বার্ষিক রিপোর্টে স্পষ্ট। কেন্দ্রের আশা অনুযায়ী, ৩-৪ লক্ষ কোটি টাকার নোট অর্থনীতিতে না- ফিরলে, সেই দায়মুক্ত হয়ে তা শীর্ষ ব্যাঙ্কের লাভের খাতায় ঢুকত। কিন্তু মাত্র ১৬ হাজার কোটি টাকা ফেরেনি। সেই সঙ্গে নোট বাতিলের জেরে তাদের খরচ প্রায় ১০৭% বেড়েছে। নতুন নোট বাজারে ছাড়তে গিয়েই সেগুলি ছাপানোর খরচ দ্বিগুণ হয়েছে।
অর্থ মন্ত্রকের অবশ্য যুক্তি, রিপোর্টে স্পষ্ট, আরবিআইয়ের ব্যয়ের তুলনায় আয় ৩০,৬৬৩ কোটি টাকা বেশি। বিশেষ তহবিলে তারা ১৩,১৪০ কোটি সরিয়েও রেখেছে। গর্গের যুক্তি, ‘‘এর থেকেই পরিষ্কার শীর্ষ ব্যাঙ্কের মুনাফার অঙ্ক ৪৪ হাজার কোটি টাকা। তাই আরও বেশি অর্থ তারা কেন্দ্রকে দিতে পারে কি না, তা নিয়েই কথা চলছে।’’