ভোটে জেতার অন্যতম চেনা পন্থা মধ্যবিত্তের মন জয়। ২০১৯-এর ভোটকে পাখির চোখ করে নরেন্দ্র মোদীও সম্ভবত সেই পথে হাঁটতে চলেছেন।
অর্থ মন্ত্রক সূত্রের খবর, ১ ফেব্রুয়ারির বাজেটে আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা আড়াই লক্ষ থেকে বেড়ে ৩ লক্ষ টাকা হতে পারে। তাতে খানিক স্বস্তি পাবেন মধ্যবিত্তেরা। পাশাপাশি উচ্চ মধ্যবিত্তদের জন্যও আয়করের বোঝা খানিক কমানো হতে পারে বলে মনে করছেন কর বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের বক্তব্য, এখন করযোগ্য আয় ১০ লক্ষ টাকার উপরে হলেই সর্বোচ্চ অর্থাৎ ৩০% হারে আয়কর দিতে হয়। ফলে এ ক্ষেত্রে উচ্চ মধ্যবিত্তদের সঙ্গে ধনী-অতি ধনীদের কোনও ফারাক থাকে না। সেই অসাম্য দূর করতে ১০ লক্ষ টাকার উপরে আরেকটি নতুন স্তর তৈরি হতে পারে। যে স্তরে আয়করের হার হতে পারে ২৫%। কারও কারও আবার মতে, সর্বোচ্চ করের হারই কমে ২৫% হতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে ধনীদের সুরাহা দেওয়া হচ্ছে, এই অভিযোগ এড়াতে ৫০ লক্ষ বা ১ কোটি টাকার বেশি আয়ে সারচার্জ বাড়তে পারে বলেও জল্পনা।
কর বিশেষজ্ঞরা অনেকে আবার বলছেন, আয়কর ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর কিছু অসুবিধাও রয়েছে। কারণ, তাতে করদাতার সংখ্যা কমে যেতে পারে। অথচ মোদী সরকারের লক্ষ্যই হল আরও বেশি মানুষকে আয়করের আওতায় আনা।
এই অবস্থায় ছাড়ের ঊর্ধ্বসীমা না বাড়িয়ে ৮০সি ধারায় কর ছাড় যোগ্য সঞ্চয়ের সীমা বাড়ানোর কথা সরকার বিবেচনা করতে পারে বলে অনেকের মত। ওই ধারায় এখন দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয় মোট আয় থেকে বাদ দিয়ে আয়করের হিসেব হয়। তা বাড়িয়ে ২ লক্ষ টাকা করা হতে পারে। তবে কর বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, দেড় লক্ষের উপরে বাড়তি সঞ্চয় শেয়ার নির্ভর প্রকল্প বা ইকুইটি লিঙ্কড সেভিংস স্কিম, মিউচুয়াল ফান্ড, এসআইপি-তে রাখলেই কর ছাড় মিলবে বলে শর্ত বেঁধে দিতে পারেন অর্থমন্ত্রী। এতে শেয়ার বাজারও চাঙ্গা থাকবে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে অর্থনীতিবিদরা পরামর্শ দিয়েছিলেন, শেয়ার বা ইকুইটির সঙ্গে ঋণপত্র বা ডেট ফান্ডেও লগ্নির চেষ্টা করা দরকার। সূত্রের খবর, একটি ডেট মিউচুয়াল ফান্ডকে ৮০সি-র আওতায় আনা হতে পারে। যাতে ন্যূনতম ৩ বছর টাকা রাখার শর্ত থাকবে।
এই ২ লক্ষ টাকার উপরে বাড়ির ঋণশোধের ইএমআই এবং পেনশন তহবিলে টাকা জমানো অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে। সব মিলিয়ে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত রাখার সুযোগ খুলে দেওয়া হতে পারে।