—প্রতীকী চিত্র।
বৈবাহিক সম্পর্ক খারাপ হলে কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও মহিলা কর্মী এ বার থেকে তাঁর মৃত্যুর পরে পারিবারিক পেনশনের টাকা পাওয়ার জন্য স্বামীর পরিবর্তে সন্তানকে বেছে নিতে পারবেন। এ জন্য সংশ্লিষ্ট পেনশন আইন সংশোধন করেছে কেন্দ্রের পেনশন ও পেনশন প্রাপকদের কল্যাণ সংক্রান্ত বিভাগ (ডিওপিপিডব্লিউ)। মঙ্গলবার বিজ্ঞপ্তিতে মহিলাদের ক্ষমতায়নের বার্তা দিয়েই এই পদক্ষেপের কথা জানিয়েছে সরকার।
সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশে মতে, সামনেই লোকসভা ভোট। এমন অবস্থায় মহিলাদের জন্য একের পর এক পদক্ষেপ তাৎপর্যপূর্ণ। সম্প্রতি মহিলা সংরক্ষণ বিল পাশ হয়েছে। ২০০ টাকা কমানো হয়েছে রান্নার গ্যাসের দাম। দরিদ্র মহিলাদের জন্য উজ্জ্বলা যোজনায় বেড়েছে গ্যাস সিলিন্ডারে ভর্তুকি টাকা। এ বার ভোটের ঠিক মুখে দাঁড়িয়ে সুরাহা করা হল বহু দিন ধরে চর্চায় থাকা আরও একটি সমস্যার।
সংশ্লিষ্ট পেনশন আইন অনুযায়ী, সরকারি পুরুষ বা মহিলা কর্মী/পেনশনভোগী মারা গেলে, তাঁর স্ত্রী অথবা স্বামী ওই পেনশন পাওয়ার প্রথম দাবিদার। সেই স্ত্রী বা স্বামী কোনও কারণে (যেমন, পুনর্বিবাহ) তা নেওয়ার অযোগ্য হলে বা মারা গেলে তবেই সন্তান সেই টাকা পান। নতুন ব্যবস্থায় কিছু পরিস্থিতিতে মহিলা কর্মী চাইলে স্বামীকে সেই অধিকার না-ও দিতে পারেন। পরিবর্তে লিখিত ভাবে জানিয়ে যেতে পারবেন সন্তানকে পারিবারিক পেনশন দেওয়ার কথা। তবে এটা করা যাবে স্বামীর সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদন করে থাকলে কিংবা তাঁর বিরুদ্ধে গার্হস্থ হিংসা প্রতিরোধ, পণ নেওয়ার অপরাধ, ফৌজদারি আইনে মামলা করে থাকলে।
ডিওপিপিডব্লিউ-র সচিব ভি শ্রীনিবাস জানান, এই ব্যবস্থা চালুর জন্য বহু আবেদন জমা পড়ছিল। তার প্রেক্ষিতেই কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটি মহিলাদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রগতিশীল পদক্ষেপ। কেন্দ্রের উদ্যোগকে স্বাগত জানান নয়া পেনশন প্রকল্প এনপিএসের অছি পরিষদের প্রাক্তন চেয়ারম্যান অতনু সেন। বলেন, ‘‘বহু মহিলা উপকৃত হবেন। স্বামী-স্ত্রীর বিবাদে অনেক সময়েই সন্তানেরা সমস্যায় পড়ে। বিশেষত স্ত্রীর অবর্তমানে। নতুন ব্যবস্থা একটি সামাজিক সমস্যা সমাধানে আংশিক ভাবে হলেও সহায়ক হবে।’’
তবে মহিলা কর্মী সন্তানকে পেনশন দেওয়ার কথা লিখে গেলেও, কিছু ক্ষেত্রে তাঁর মৃত্যুর পরে স্বামীই তা পাবেন। যেমন, সন্তান নাবালক বা মানসিক রোগী হলে এবং স্বামী সন্তানের অভিভাবকত্বের দায়িত্ব নিলে। তিনি দায়িত্ব না নিলে বা মারা গেলে যিনি অভিভাবক হিসেবে থাকবেন, তাঁর মাধ্যমে পেনশন পাবে সন্তান। সাবালক হওয়ার দিন থেকে হাতে পাবেন যোগ্য বিবেচিত হলে। সন্তানেরা পেনশনের যোগ্যতা হারানোর পর স্বামীই আমৃত্য বা পুর্নবিবাহ না করা পর্যন্ত (যেটা আগে হবে) তা পাবেন।