দর পড়ছে, সোনা কেনার হিড়িকে ‘মিনি ধনতেরাস’

ক্যালেন্ডারে যে-দিনই নির্দিষ্ট থাকুক। শহরে পাঁচ মাস আগেই শুরু হয়ে গেল ধনতেরাস। দাম পড়তেই সোনা কিনতে ঝাঁপাচ্ছেন ক্রেতারা। আর, সোনা কেনার এই হিড়িককেই ‘মিনি ধনতেরাস’ আখ্যা দিচ্ছেন শহরের স্বর্ণশিল্প মহল।

Advertisement

গার্গী গুহঠাকুরতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৫ ০৩:২০
Share:

ক্যালেন্ডারে যে-দিনই নির্দিষ্ট থাকুক। শহরে পাঁচ মাস আগেই শুরু হয়ে গেল ধনতেরাস।

Advertisement

দাম পড়তেই সোনা কিনতে ঝাঁপাচ্ছেন ক্রেতারা। আর, সোনা কেনার এই হিড়িককেই ‘মিনি ধনতেরাস’ আখ্যা দিচ্ছেন শহরের স্বর্ণশিল্প মহল।

গত সোমবার বিশ্ব জুড়ে সোনার দাম হুড়মুড়িয়ে পড়ে যাওয়ার পরেই শুরু হয়েছে সোনা কেনার ধুম। সোনার দাম গত কয়েক মাস ধরেই কমতির দিকে ছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাজারও উঠছিল না। বিশ্ব বাজারে গত পাঁচ বছরে সোনার দাম সবচেয়ে নীচে নেমে যাওয়ার ফলেই সেই ফিকে ছবিটা বদলে গিয়েছে। শহরের প্রথম সারির স্বর্ণ ব্যবসায়ীদের দাবি, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে।

Advertisement

সোনার দাম পড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে উঠে এসেছে আন্তর্জাতিক স্তরের আর্থিক ও রাজনৈতিক ঘটনা পরম্পরা। সপ্তাহের গোড়াতেই সাংহাইয়ের পণ্য লেনদেনের বাজারে একলপ্তে ৩৩,০০০ কেজি সোনা বিক্রি করেছেন চিনা লেনদেনকারীরা। বেহাল অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে আইএমএফের কাছে তা বিক্রির অনুমতি চেয়েছে গ্রিসও। সব মিলিয়ে, বাজারে জোগান উপচে পড়ার সম্ভাবনায় বিশ্ব বাজারে পাঁচ বছরের মধ্যে সবচেয়ে নীচে নেমে গিয়েছে সোনার দাম। সোমবার লেনদেন চলাকালীন প্রতি ট্রয় আউন্স সোনার (৩১.১ গ্রামের বার) দর এক সময়ে তলিয়ে যায় ১,১০০ ডলারেরও নীচে। কিছুটা একই ছবি কলকাতা-সহ ভারতের বাজারে। ওই দিন শহরে প্রতি ১০ গ্রাম পাকা (২৪ ক্যারাট) সোনার মূল দাম দাঁড়িয়েছিল ২৫,৬৬০ টাকা।

অর্থনীতির তত্ত্ব নিয়ে অবশ্য বিশেষ মাথা ঘামাচ্ছেন না ক্রেতারা। তাঁরা ভিড় জমিয়েছেন সোনার দোকানে। দাম এক সঙ্গে এতটা পড়ে যেতেই চাহিদা বেড়ে গিয়েছে। এম পি জুয়েলার্সের অন্যতম কর্ণধার রুদ্র রায়চৌধুরীর দাবি, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বিক্রি বেড়েছে। তিনি জানান, সাধারণত বছরের এ সময়ে বাজার ঠান্ডা থাকে। গত কয়েক মাস ধরেই বিক্রির হার খুব শ্লথ ছিল। সেই বাজার তিন দিনে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে।

অসময়ে দোকানে উপচে পড়া ভিড় দেখে অবাক হয়েছেন সেনকো গোল্ড অ্যান্ড ডায়ামন্ডসের অন্যতম কর্তা শুভঙ্কর সেন ও স্বর্ণশিল্প বাঁচাও সংগঠনের কর্তা বাবলু দে। শুভঙ্করবাবু জানান, প্রায় আড়াই গুণ বিক্রি বেড়েছে। তিনি মন্তব্য করেন, ‘‘একে মিনি ধনতেরাস বলা যেতে পারে। সেই উৎসব আসার আগেই তৈরি হয়ে গেল চাহিদা। এমনকী কিছু কিছু জিনিসের স্টক শেষ হয়ে গিয়েছে।’’

গত কয়েক মাস ধরেই ক্রেতারা দাম কমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন বলে দাবি বাবলুবাবুর। তিনি জানান, বিশ্ব বাজারে সোনা গত পাঁচ বছরে সবচেয়ে কম দামে নেমে যেতেই সেই অপেক্ষার শেষে। তিনি জানান, গত কয়েক মাস গয়না বিক্রি প্রায় তলানিতে ঠেকেছিল। সেই ঘাটতি অনেকটাই পুষিয়ে দিচ্ছে এই অসময়ের বিক্রি। ২০ শতাংশের বেশি ব্যবসা বেড়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement